১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

জাবি’র স্নাতকোত্তর পরীক্ষার রুটিনে শিক্ষার্থীরা বেকায়দায়

মাকসুদ আহম্মদ, বিশেষ প্রতিবেদক 

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোভিড-১৯ এর কারনে বন্ধ ছিল প্রায় দেড় বছর।  জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের স্নাতকোত্তর প্রথম পর্বের পরীক্ষা শুরুর রুটিন দিয়ে পরীক্ষা পদ্ধতিকে কলুষিত করছে। কারণ সরকার আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দিয়েছে। আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়(জাবি) মাত্র ৬ দিনের মধ্যেই পরীক্ষা শুরুর ঘোষণা দেয়ায় বেকায়দায় পড়েছে লাখো শিক্ষার্থী। সিলেবাস শেষ না করে জাবি’র এমন সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্থ হবে লাখো শিক্ষার্থীরা। করোনার কারণে ২০২০ সালের ১৫ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ কারণে শিক্ষার্থীদের কোচিং সেন্টারে যেমন সিলেবাস শেষ করতে পারেনি তেমনি কলেজেও পড়োলেখার কানাকড়িও শেষ হয়নি। শিক্ষার্থীদের সময় না দিয়ে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে স্নাতকোত্তরসহ বিভিন্ন পরীক্ষা গ্রহণ করা হলে অকৃতকার্যের হার বৃদ্ধি পাবে। ফলে অনিশ্চয়তায় শিক্ষা বঞ্চিত হবে হাজারো শিক্ষার্থী।

এদিকে, মাত্র ৬ দিনের ঘোষণায় স্নাতকোত্তর পরীক্ষার্থীদের টেস্ট পরীক্ষা না নিয়ে চুড়ান্ত পরীক্ষা আদায় করার মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে জাবি। স্নাতকোত্তর পরীক্ষার রুটিন, পরীক্ষা রেজিস্ট্রেশন ও পরীক্ষার চূড়ান্ত ফরম পূরণে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরের কর্মকর্তারা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে ।

অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন সমাপ্ত করেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আকম্মিকভাবে পরীক্ষার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু সিলেবাস শেষ করার কোনো পদক্ষেপ নেয় নি। সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। অথচ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শ্রেণী কার্যক্রম বন্ধ রাখাসহ পরীক্ষা পদ্ধতি এমনকি নতুন সেশনের ভর্তি পরীক্ষাও বন্ধ রেখেছে।

২০১৮ সালের নতুন সিলেবাস অনুযায়ী আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত স্নাতকোত্তর প্রথম পর্বের পরীক্ষার রুটিন ঘোষণা করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। অপর দিকে একই সেশনের পুরাতন সিলেবাস অনুযায়ী স্নাতকোত্তর তথা মাস্টার্স প্রথম পর্বের পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে। এই সেশনের পরীক্ষা শেষ হবে আগামী ৭ অক্টোবর। শুধু তাই নয়, তৃতীয় বর্ষ ডিগ্রী পাস কোর্সের পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২ অক্টোবর থেকে। এ পর্বের পরীক্ষা রুটিন অনুযায়ী শেষ হবে আগামী ৯ নভেম্বর।

পরীক্ষা নীতিমালা অনুযায়ী চুড়ান্ত ফরম পুরণের পর কমপক্ষে দুইমাস সময় দেয়ার পর স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষা গ্রহণের নিয়ম রয়েছে। প্রশ্ন ওঠেছে, ২০২১ সালের ২৬ আগস্ট পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দফতর থেকে কিভাবে রুটিন প্রকাশ করা হলো তা নিয়ে। দীর্ঘ দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকার পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নেয়া শুরু করেছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের প্রতি এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতর থেকে একের পর এক সিদ্ধান্ত দিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ, নিবন্ধন ও ভর্তি কার্যকর করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে সংশ্লিষ্টরা। কোভিড-১৯ এর কারণে অমানবিকভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষা গ্রহন করতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। গত দেড় বছরে শিক্ষার্থীরা ঘরকুনো হয়ে পড়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা  রয়েছে। কারণ যেখানে শিক্ষা সহযোগিতা নিতে পারছে না তেমনি  শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা না থাকায় শিক্ষা গ্রহন করতে পারেনি। এদিকে, সরকারী নিষেধাজ্ঞার কারণে কলেজ ও কোচিং সেন্টার বন্ধ ছিল। সিলেবাস শেষ করতে কোচিং সেন্টারেও যেতে পারেনি।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সেশনজট কমাতে দ্রুত পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি পরবর্তী সেশনের শিক্ষার্থীদের ভর্তির নিশ্চয়ন করা হচ্ছে অনলাইনের মাধ্যমে। এখন ইন্টারনেটের যুগে অনলাইন ঘরে ঘরে পৌছে গেছে। ফলে গ্রামগঞ্জ, শহর বন্দর কোথাও ইন্টারনেট নেই বা সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে না তা সঠিক নয়।

বাংলাধারা/এফএস/এফএস

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ