কক্সবাজার প্রতিনিধি »
কক্সবাজারে জিয়াফত খেয়ে কর্মস্থলে ফেরার পথে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার পেকুয়ার নন্দীপাড়া ষ্টেশনে সিএনজি ও মাটিভর্তি ডাম্পারের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার উত্তর ধূরুং ইউনিয়নের আজিম উদ্দিন সিকদার পাড়ার গিয়াস উদ্দিন সিকদার (ভেন্ডার গিয়াস উদ্দিন) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে মারা যান গত ২২ সেপ্টেম্বর। তার মৃত্যুর ৩৩দিনের মাথায় ২৪ অক্টোবর চল্লিশার (জিয়াফত) আয়োজন করে পরিবার। বাড়ির অভিভাবকের জিয়াফতে অংশ নিতে বাড়িতে আসেন চাকুরি, ব্যবসা ও পড়ালেখার জন্য দ্বীপের বাইরে থাকা পরিবারের সজনরা। জিয়াফত শেষে স্ব-স্ব কাজে যোগ দিতে ২৬ অক্টোবর কুতুবদিয়া ত্যাগ করেন মরহুম গিয়াসের প্রথম ছেলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কর্মচারি আমিনুল কবির, বড় মেয়ের জামাই ঠিকাদার আক্কাস উদ্দিন ও নাতনি কলেজ শিক্ষার্থী সোনিয়া আক্তার।
সোমবার দুপুরে ট্রলারে নদী পেরিয়ে মগনামাঘাট হতে চকরিয়া বাস স্টেশনের উদ্দেশে সিএনজি টেক্সিতে উঠেন বাবা আক্কাস, মেয়ে সেনিয়া ও মামা আমিনুল। সিএনজিটি পেকুয়ার মেহেরনামা পেরিয়ে নন্দীপাড়া ষ্টেশনে আসার সাথে সাথে মাটিভর্তি ডাম্পারের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এতে আমিনুল কবির (৩২) ঘটনাস্থলে মারাযান। দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া সিএনজির গুরুতর আহত বাকি যাত্রীদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান আক্কাস উদ্দিন (৩৮)। আর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতে নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১টার দিকে বাবা ও মামার পথ অনুসরণ করে শিক্ষার্থী সোনিয়াও (১৬)।
একই ঘটনায় মারাযান সিএনজি চালক পেকুয়ার তালেবও। একই পরিবারের তিনজনকে মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) ভোরে কুতুবদিয়া গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে এক সাথে তিন জনের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এসময় হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
কুতুবদিয়ার উত্তর ধূরুং ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আ.স.ম শাহারিয়ার বলেন, এটি চরম মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক। বাড়ির মুরব্বির জিয়াফত খেয়ে আক্কাস মেয়েকে নিয়ে কক্সবাজারের বাসায় ফিরছিল। তিনি পরিবার নিয়ে সেখানে থেকে ঠিকাদারির কাজ করতেন। আমিনুল দুলাভাই-ভাগনির সাথে কক্সবাজার গিয়ে আজ (২৭ অক্টোবর) কর্মস্থল চট্টগ্রামে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ভাগ্য তাদের এক সাথেই তিনজনকে চির ঠিকানার বাসিন্দা করলো। এটি শুধু মরহুম গিয়াস উদ্দিন ভেন্ডারের পরিবারে নয়, পুরো কুতুবদিয়া দ্বীপে শোকের ছায়া ফেলেছে।
এদিকে, একই পরিবারের তিনজনের মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন কক্সবাজারস্থ কুতুবদিয়া সমিতি ও কুতুবদিয়া ফাউন্ডেশন নেতৃবৃন্দ। তারা মরহুমদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
বাংলাধারা/এফএস/এএ













