চট্টগ্রাম নগরের নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহারে একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. জিনবোধি ভিক্ষুকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত ও হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে বৌদ্ধ সমাজ।
চট্টগ্রাম নগরের নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহারের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা। এছাড়া চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মানবববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘একুশে পদকপ্রাপ্ত বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু ড. জিনবোধি ভিক্ষুর ওপর হামলা চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারের জন্য কলঙ্কিত অধ্যায় বলে মনে করছে বৌদ্ধ সমাজ। একজন প্রাজ্ঞ মানুষের ওপর হামলা ভিক্ষু সমাজের জন্য লজ্জা ও অপমানজনক। জিনবোধি বৌদ্ধ সমাজের প্রতিনিধিত্ব করেন, তাঁর ওপর হামলা আর বৌদ্ধ সমাজের ওপর হামলা একই কথা। অবিলম্বে এ হামলার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি চাই।’
বক্তারা আরও বলেন, এটা একটা চক্রান্ত এবং দুই দিনব্যাপী আয়োজিত ধর্মীয় অনুষ্ঠান পণ্ড করার অপকৌশল। রেখা বড়ুয়া নামের সেই মহিলা আগের দিন বৃহস্পতিবার রাতেও সাজানো ঘটনা ঘটাতে ভিক্ষুর থাকার রুমের সামনে গিয়ে অশ্লীল বাক্য ব্যবহার করেছিল বলে উল্লেখ করেন বক্তারা।
বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার সভাপতি অজিতানন্দ মহাথের বলেন, ‘গতকালকের (শুক্রবার) ঘটনা চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারের জন্য একটি কলঙ্কিত অধ্যায়। যেখানে একজন প্রাজ্ঞ মানুষের ওপর হামলা চালানো হয়। যা ভিক্ষু সামাজের জন্য লজ্জা ও অপমানজনক।’
চট্টগ্রাম সরকারি মডেল কলেজের অধ্যক্ষ অর্থদশী বড়ুয়া বলেন, ‘একুশে পদক প্রাপ্ত ড. জিনবোধির ওপর হামলা সম্পূর্ণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সাধারণ মানুষের ওপর হামলা একই কথা। তিনি আমাদের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রতিনিধিত্ব করেন। এই হামলার বিচার চাই।’
এদিকে ড. জিনবোধি ভিক্ষু গণমাধ্যমকে দেয়া এক বক্তব্যে বলেন, ‘অবৈধ, অনির্বাচিত এবং বৌদ্ধমন্দির জালিয়াতকারী ওরা (হামলাকারীরা), হাইকোর্ট থেকে জজকোর্ট আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। তাদেরকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন আদালত। তাদের বিরুদ্ধে বিহারের অর্থ আত্মসাৎ, মানহানি মামলা, অবৈধভাবে বিহার দখলের তিনটা মামলা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বুদ্ধ পূজা ও গুরু পূজার আয়োজন করি। ওরা উপাসক ও উপাসিকাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ঢুকতে বাধা দেয়। ওই সময়ে ওই নারী আমার মোবাইল কেড়ে নিয়ে নেয়। পুলিশ নিয়ে যখন গিয়েছি তখন মোবাইল ফেরত দিতে বাধ্য হয়।’
‘সেখানে পুলিশ সহ আনুমানিক ৩শ লোক উপস্থিত ছিলেন। আমি ৬৪ বছর বয়সী একজন শিক্ষক, উনি আমার বোন, উনার ছেলেমেয়ে মানুষ করেছি আমি। আমি যৌন হয়রানিতে জড়িত না।’
প্রত্যক্ষদর্শী ও উপস্থিত জনতা এবং সিসি টিভির ফুটেজ দেখলে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে জানান ড. জিনবোধি ভিক্ষু।













