বর্ষা এলেই যেন মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে ডেঙ্গু জ্বর। এই জ্বর একটি মশাবাহিত ভাইরাল সংক্রমণ রোগ। স্ত্রী জাতীয় এডিস মশার কামড়ে এই রোগ ছড়ায়। বর্ষায় এলেই বেড়ে যায় এডিস মশার উৎপাত। পরিষ্কার ও সচ্ছ পানিতে এডিস মশা ডিম পাড়ে এবং সেখানেই ঘটে মশার বংশবিস্তার। ফলে বৃদ্ধি পায় ডেঙ্গু জ্বরের আশঙ্কা ও প্রভাব।
সব সময় ডেঙ্গুর লক্ষণ একভাবে প্রকাশ পায় না। কারও ক্ষেত্রে এর লক্ষণ হালকা তো কারও ক্ষেত্রে এর প্রভাব আরো গুরুতরও হতে পারে। তবে ডেঙ্গু জ্বরের সাধারণ লক্ষণ হলো প্রবল জ্বর, মাথাব্যথা, গাঁটে গাঁটে ব্যথা এবং পেশিতে ব্যথা, ফুসকুড়ি ও ক্লান্তি। পরিস্থিতি গুরুতর হলে ডেঙ্গু জ্বর মৃত্যুরও কারণ পর্যন্ত হতে পারে। এ জ্বরে শরীরের তাপমাত্রা ১০৪° ফারেনহাইট বা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি উঠতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও উপসর্গ
* জ্বর ও ঠান্ডা লাগা
* মাথাব্যথা
* পেশি, হাড় বা জয়েন্টে ব্যথা
* বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
* চোখের পিছনে ব্যথা
* গ্রন্থি ফুলে যাওয়া
* গায়ে লাল রঙের ফুসকুড়ি ওঠা।
ডেঙ্গু জ্বর গুরুতর হওয়ার লক্ষণ
* প্রচণ্ড পেট ব্যাথা
* ক্রমাগত বমি হওয়া
* মাড়ি বা নাক থেকে রক্ত পড়া
* প্রস্রাবে রক্ত
* মলে বা বমিতে রক্ত
* ত্বকের নিচে রক্তপাত
* শ্বাসকষ্ট।
সতর্কতা
ডেঙ্গু জ্বর থেকে বাঁচতে চাইলে এর বিস্তার রোধে সচেতন হওয়া জরুরি। এর জন্য মশার প্রজনন স্থান নির্মূল করতে হবে। এডিস মশা জমে থাকা পরিষ্কার ও স্বচ্ছ পানিতে বংশবৃদ্ধি করে। তাই যেসব জায়গায় পানি জমে থাকে অথবা পানি জমে থাকার সম্ভাবনা আছে ওই সকল স্থান নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। পানি রাখা হয় এমন সকল পাত্রগুলো ঢেকে রাখতে হবে। যেকোনো খোলা পাত্রে তিনদিনের বেশি পানি জমিয়ে রাখা যাবে না।
এছাড়া চলাফেরার জন্য লম্বা হাতার পোশাক বেছে নিতে হবে। বাজারে কিছু ক্রিম পাওয়া যায় যা মশাকে দূরে রাখতে সহায়তা করে। এ ধরনের ক্রিম হাত ও পায়ে ব্যবহার করতে হবে ।
চিকিৎসা
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সবসময় নিজেকে হাইড্রেটেড রাখতে হবে। কোনোভাবেই শরীরে পানির ঘাটতি হতে দেওয়া যাবে না। দিনে অন্তত ৩ থেকে ৪ লিটার পানি পান করতে হবে।
সেই সাথে জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে দিনে একটি করে ডাবের পানি খেতে হবে। কোনো ভাবেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে কোনো ওষুধ খাওয়া যাবে না।













