হাসান সৈকত »
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকার বেসরকারি সীমা অক্সিজেন অক্সিকো লিমিটেডে ভয়াবহ বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ২০ জন। ইতোমধ্যে ২ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বাকি ১৮ জনের মধ্যে প্রভাস শর্মা এবং মাকসুদ নামের দুই শ্রমিক আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে প্রভাস শর্মার অবস্থা আশঙ্কাজনক। দুর্ঘটনার পর থেকে এখনও তার জ্ঞান ফিরেনি। অন্যজন শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে বিস্ফোরণের ঘটনায় তার কোমরের নিচের অংশ উড়ে গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রিডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, প্রভাস শর্মা ও মাকসুদ নামের দুই রোগী আইসিইউতে আছেন। তাদের মধ্যে ভর্তি হওয়ার পর থেকে প্রভাসের জ্ঞান ফিরেনি। অন্যদিকে মাকসুদ আশঙ্কামুক্ত।
এ সময় কথা হয় প্রভাসের ভাই নয়ন শর্মার সাথে। তিনি জানান, সীমা অক্সিজেন অক্সিকোর যে মেশিনের অপারেটর ছিলেন সে মেশিনটিই বিস্ফোরিত হয়ে তিনি আহত হয়। প্রভাস এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক।
প্রভাস, মাকসুদ ছাড়াও গুরুত্বর আহত হয়ে হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে ভর্তি হয়েছেন ট্রাক চালক সোলায়মান, প্রকৌশলী শাহরিয়ার ও আজাদ।
সোলায়মান সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের মালবাহী ট্রাকের চালক ছিল। বিস্ফোরণের সময় তিনি প্ল্যান্টের বাইরে ট্রাকের ভেতরেই অবস্থান করছিলেন।
এ ঘটনার বর্ণনায় তিনি জানান, আমি প্ল্যান্টের বাইরে ট্রাকের ভেতরে থাকায় প্রাণে বেঁচে গেছি। তবে বিস্ফোরণের ধাক্কায় ট্রাকের সামনে থাকা কাচ ভেঙে আমার দুই চোখে পড়ে।
তিনি আরও জানান, তিনি এবং তার ছেলে রাকিব প্ল্যান্টে ট্রাক চালকের পদে কাজ করেন। বিস্ফোরণের সময় রাকিব গাড়িসহ কারখানার পাশে অবস্থান করছিল। যে কারণে রাকিব দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়।
একই বিভাগে ভর্তি হয়েছেন শাহরিয়ার ও আজাদ নামে দুই রোগী। তারা উভয় সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের প্রকৌশলী।

ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসকের সাথে কথা বলে জানা যায়, চক্ষু বিভাগে একজন ট্রাক চালক ও দুইজন প্রকৌমলী চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে আজাদের ডান চোখের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার চোখের মণি ফেটে গেছে।
হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রিডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান জানান, এখন পর্যন্ত নিহত ছয় জনের লাশ শনাক্ত করা হয়েছে। চলছে পোস্টমর্টেমের কাজ। আমরা পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিচ্ছি।
আহতদের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে সাত হাজার টাকা করে নগদ অর্থ সহায়তা পেয়েছেন তারা।
চমেক হাসপাতালের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২০ জন। ইতোমধ্যে আহত ২ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তাদের মধ্যে ৭ জন ক্যাজুয়ালিটি বিভাগে, ২ জন অর্থোপেডিক্স বিভাগে, ৮ জন নিউরো সার্জারি বিভাগে এবং ৩ জন চক্ষু বিভাগে ভর্তি আছেন।
বাংলাধারা/এআই













