কক্সবাজার প্রতিনিধি »
প্রায় ৫৮ দিন সাগরে ভেসে টেকনাফ উপকূলে উঠে আসা প্রায় ৪শ’ রোহিঙ্গাকে জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রাথমিক সহযোগিতার পর বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে টেকনাফ কোস্টগার্ড স্টেশন থেকেই তাদের হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।
এর আগে বুধবার (১৫ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে রোহিঙ্গা বোঝাই ট্রলারটি কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়ার জাহাজচুরা এলাকায় ভিড়ে। খবর পেয়ে কোস্টগার্ড এবং পুলিশের সদস্যরা এসে তাদের উদ্ধার করে সৈকতের বালুচরে জড়ো করে ঘিরে রেখে গণনা শেষে রাত ১১টার দিকে হেফাজতে নেয়া হয়। সাগরপথে অবৈধভাবে মালেশিয়ার উদ্দেশে ট্রলারে উঠে তীরে গিয়েও মালয়েশিয়ায় স্থান না পেয়ে তারা পুনরায় বাংলাদেশে ফিরে আসে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ কোস্টগার্ডের স্টেশন কমান্ডার সোহেল রানা।
তিনি বলেন, উদ্ধারকৃত রোহিঙ্গা মিয়ানমার নাগরিকরা বিভিন্ন ক্যাম্প হতে মালয়েশিয়া যাবার উদ্দেশ্যে সমুদ্রে পারি জমায়। কিন্তু মালয়েশিয়া সমুদ্র সীমানায় মালয়েশিয়ান কোস্ট গার্ড তাদেরকে আটক করে কিছু খাবার, পানি ও জ্বালানী দিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। পরবর্তীতে তারা সেখান থেকে চলে এসে মায়ানমারে প্রবেশের চেষ্টা করলে মিয়ানমার নৌবাহিনী তাদের আটক করে এবং বাংলাদেশের দিকে পাঠিয়ে দেয় বলে জানায় উদ্ধারকৃত রোহিঙ্গা নাগরিক।
কোস্টগার্ড কর্মকর্তা সোহেল রানা আরো জানান, মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে না পেরে বাংলাদেশের দিকে চলে আসে রোহিঙ্গা বোঝাই ট্রলারটি। ওই ট্রলারে থাকা ৫১৫ জনের মধ্যে ৩৯৬ রোহিঙ্গা ফিরেছে সাগর কূলে। তাদের মাঝে ১৫০ জন পুরুষ, ১৮২ জন নারী এবং ৬৪ জন শিশু রয়েছে। এসব রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে বেশীরভাগই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা ও আহারাদি দিয়ে ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শর্ত দেয়া হয়েছে, করোনা সংক্রমণ রোধে সবাইকেই ১৪ দিনের কোয়ারান্টোইন নিশ্চিত করতে হবে।
এর আগে, বুধবার রাত ৯টার দিকে টেকনাফের শামলাপুর সাগর উপকূলে আসে রোহিঙ্গা বোঝাই ট্রলারটি। সেখান থেকে কোস্টগার্ড ও বিজিবি-পুলিশের সদস্যরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করে। রাতে তাদের টেকনাফের ট্রানজিট জেটিতে এনে খাবার ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা দেয়া হয়। পরে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনের শর্তে তাদের ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধির কাছে দেয়া হয়।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ
				











