৪ নভেম্বর ২০২৫

ডলারের অজুহাতে রোজার আগেই বাড়ছে ছোলার দাম

রোজার

পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের বাজার ক্রমেই অস্থির হয়ে উঠছে। রোজার বাকি আর ১০ দিন। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম খাতুগঞ্জের পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা ডলারের নাম বৃদ্ধির অজুহাতে ইফতারি পণ্য ছোলার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, রীতিমতো বেড়েছে ছোলার দাম। পণ্যটি পাইকারি প্রতি কেজি ৮৫ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে দেখা গেছে। আর খুচরায় কিনতে গেলে প্রতিকেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকছে বিক্রেতারা।

আলমগীম নামের এক পাইকারি ব্যবসায়ি বলছেন, ভারত বা অস্ট্রেলিয়ায় ছোলার বুকিং রেট বাড়তি থাকার কারণে আমদানিও বেশি দামে করতে হচ্ছে। তাই দেশের বাজারে পণ্যটির দাম বাড়ছে।

এদিকে বাজারে ছোলার ঘাটতি নেই জানিয়ে খাতুনগঞ্জের ছোলার আড়তদার সৃজন দাশ বলেন, আড়তের ছোলার বেশির ভাগই গত বছর ভারত থেকে আমদানি করা। ভারতীয় ছোলার পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ান ছোলাও বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারে গত বছরের ছোলা কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। আর নতুন আমদানি করা ছোলার দাম তুলনামূলক বেশি।

জানা গেছে, ২০২১ সালের রমজানের আগে ছোলার কেজি ছিল ৬০ থেকে ৬২ টাকা, ২০২২ সালে ৭৪-৭৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছিল। গত বছরের আগস্টে পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে নিম্নমানের ছোলার কেজি ছিল ৭২ টাকা। আর ভালো মানের ছোলা ছিল ৭৫ টাকা কেজি।

এরপর চলতি বছরের জানুয়ারির শেষের দিকে নিম্নমানের ছোলার কেজি ছিল ৭৮ টাকা, ভালো মানেরটা সর্বোচ্চ ৮৯ টাকা। গত ২২ ফেব্রুয়ারিতেই দাম ওঠে কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ৯৩ টাকায়।

চট্টগ্রাম ডাল মিল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ দে বলেন, বর্তমানে ডলার রেট পড়ছে ১২৫ টাকা। এলসি খুলতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন আমদানিকারকরা। বর্তমান ডলার রেট হিসাব করলে প্রতি কেজি ছোলার ক্রয়মূল্যই পড়বে ৯৬ টাকা। এর সঙ্গে পরিবহন, শ্রমিক খরচ যোগ করলে আরও বেড়ে যাবে। সে হিসাবে ছোলার দাম এখনো কমই আছে।

তিনি আরও বলেন, আগের আমদানি করা কিছু ছোলা আড়তে রয়েছে। সেগুলোর দাম কেজি ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডলার সংকটের কারণে এখন নতুন ছোলা আমদানি তেমন একটা হচ্ছে না। নতুন করে যেসব ছোলা আমদানি হচ্ছে সেগুলো কেজি সর্বোচ্চ ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

কিন্তু কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইনের দাবি উল্টো। তিনি বলেন, প্রতিবছর দেখা যায়, রোজা শুরুর আগে বিভিন্ন অজুহাতে পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা, যাতে রোজার সময় প্রশাসনের চাপে বাধ্য হয়ে কমিয়ে দিতে হলে লভ্যাংশ রেখে কমাতে পারেন; সে জন্য আগেভাগে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। আর এখন খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারি বাজার থেকে পণ্যটি সংগ্রহ করবেন। এ সুযোগটিও কাজে লাগাচ্ছেন তারা। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, অনেকেই পণ্যটি মজুদ করা শুরু করছেন।

তিনি আরও বলেন, এখন যেসব ছোলা বাজারে আছে; সেগুলোর বেশির ভাগই গত বছরের আমদানি করা। বাড়তি ডলার দিয়ে কেনা ছোলা তো বাজারে তেমন আসেনি। কম দামে সংগ্রহ করা ছোলাগুলো ডলার সংকটের অজুহাতে দামি বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এখনই উচিত হবে প্রশাসনের বাজার তদারকি শুরু করা। তাহলে রোজার সময় দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

বাংলাধারা/পিএ

আরও পড়ুন