২৪ অক্টোবর ২০২৫

ডা. শাহাদাতের ১০০ দিনের দায়িত্বকাল: সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র হিসেবে ৩ নভেম্বর শপথ গ্রহণের পর বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রামকে “গ্রিন, ক্লিন ও হেলদি সিটি” হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন। দায়িত্ব গ্রহণের ১০০ দিন পূর্তিতে তিনি তাঁর কাজ ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করেন।

উল্লেখযোগ্য সাফল্য

১. প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি ও বিপ্লব উদ্যান উদ্ধার: ২০১৬ সাল থেকে দখলে থাকা প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি পুনরুদ্ধার করেন। এছাড়া বাণিজ্যিকভাবে দখল হওয়া বিপ্লব উদ্যান মুক্ত করে সেখানে সবুজ পার্ক তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। 2. সবুজায়ন ও সৌন্দর্যবর্ধন: প্রতিটি ওয়ার্ডে সবুজায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে সৌন্দর্যবর্ধন করে লাইটিং ও টয়লেট সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। 3. যানজট নিরসন: আগ্রাবাদে “পে-পার্কিং” চালু করা হয়েছে। চকবাজারের রাস্তায় বসা বাজার সরিয়ে ব্যবসায়ীদের মার্কেটের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় পুনর্বাসন করা হয়েছে। 4. জলাবদ্ধতা নিরসন: জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানে ২১টি খালকে মেগা প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কৃষি খাল, বিকল্প খাল ও গুপ্তা খাল পরিষ্কার করে পানির প্রবাহ সচল করা হয়েছে। 5. খেলার মাঠ উন্নয়ন: প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ তৈরির প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে ৭টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। আগ্রাবাদ জাম্বুরি মাঠ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার কাজ চলছে। 6. সমন্বিত সেবা: আগে সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব থাকলেও এখন নিয়মিত মাসিক বৈঠকের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। 7. বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন: দিনের পরিবর্তে রাতের বেলায় পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে, যা শহরের পরিবেশের জন্য ইতিবাচক। 8. স্বাস্থ্যসেবা: মেমন হাসপাতালকে ডেডিকেটেড হাসপাতালে রূপান্তর করা হচ্ছে, যেখানে বিনামূল্যে সেবা প্রদান করা হবে। 9. অর্থায়নের উদ্যোগ: চসিকের আয় বাড়াতে বন্দরের কাছে ১৬০ কোটি টাকার পৌরকর প্রস্তাব করা হয়েছে, যা বন্দর নীতিগতভাবে গ্রহণ করেছে।

প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতা

১. ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ি: জাইকার প্রকল্পের আওতায় ওয়াসার অপরিকল্পিত রাস্তা কাটার ফলে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে।

২. ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ধীরগতি: আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকার রাস্তা সংস্কার করা সম্ভব হয়নি, যা মেয়রের জন্য একটি হতাশার বিষয়।

৩. আইনি জটিলতা: বন্দরের আয়ের ১% অর্থ চসিকের জন্য দাবি করা হলেও আইনি সীমাবদ্ধতার কারণে তা বাস্তবায়ন করা যায়নি।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

১. দিঘিগুলো উন্মুক্তকরণ: আসকার দিঘি, ভেলুয়ার দিঘি ও ডেবার পাড় পুনরুদ্ধার করে সৌন্দর্যবর্ধন ও জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

২. আরবান ডিসপেনসারি উন্নয়ন: মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে আরবান ডিসপেনসারিগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে।

১০০ দিনের কাজের মূল্যায়নে মেয়র শাহাদাত হোসেন জানান, কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও তিনি আন্তরিকতার ঘাটতি রাখেননি। নাগরিকদের স্বপ্নের চট্টগ্রাম গড়ে তুলতে তিনি নিরলসভাবে কাজ চালিয়ে যাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

আরও পড়ুন