ঈর্শা
জানি তুমি কেন ঈর্শান্বিত-
আমি উপমা ও শব্দের প্রেমিকা বলে
আমি ধবল জোছনার প্রেমিকা বলে
আমি কুমকুমের শত রঙে আবিষ্ট বলে
আমি রঙিন রঙির রঙ্গনে মুগ্ধ বলে
আমি বৃষ্টির প্রেমিকা বলে ।
আমার হৃদয় দুয়ারে যখন আসে ফাগুন
প্রকৃতিতে ছড়িয়ে পড়ে রুপের আগুন
তখন তোমার হৃদয় ছেয়ে রয় মেঘলা আকাশে
তখন তুমি বরফ হও হিমময় শীতল বাাতাসে ।
কারণ তুমি ঈর্শান্বিত হও ।
আমি সব বুঝেও চুপ রই খুলি না বুকের অর্গল
এক অসীম রসিকতায় থামিয়ে রাখি আমার গল
আমি চাই তুমি নিজেই আবিষ্কার কর যে-
সবার আগে আমি তোমার প্রেমিকা
সবেতে মুগ্ধ রই তোমাকে আমার করে পাই বলে
আমি প্রকৃতির প্রেমিকা হলাম তোমায় পেলাম বলে
তুমি যেন ঈর্শান্বিত হয়ো না ।
সুন্দরের মাঝে বাঁচি
আমাদের এইখানে—
শিরীষের ডালে সবুজ পাতার ফাঁকে
ফুটে রয় গোছাফুল ফিঙে পাখি ডাকে
রোজ বিকেলে জোড়-বিহঙ্গেরা ওড়ে
ফাগুন হাওয়ায় গাছের পাতা নড়ে ।
এইখানে আরো–
ব্যাকুল করে মন আমাদের আম্র-মুকুলে
বাউলা বাতাস পেলে কলমীলতা দোলে
জোছনা রাতে শেফালির সুভাস ভাসে
রমনীয় মন হাসে শরত শুভ্র কাশে ।
আমাদের এইখানে–
ধানের উপর ঢেউ খেলে যায় বাতাস
কৃষান মনে দোলা দেয় পাকা ধানের সুবাস
শাল পিয়ালের বনে দোয়েল ময়না গায়
মাঠ-বালিকা নেচে চলে নুপূর দিয়ে পায় ।
আমাদের এইখানে–
গায়ের বধূ ঘোমটা টেনে নোলক প’রে-
বুকের স্বপ্ন আঁকে নকশী সেলাই করে ।
গায়ের মেয়ে ফুল কুড়িয়ে গাঁথে মালা
ভোর সকালে শিউলি ফুলে সাজায় ডালা ।
আমাদের এখানে–
গান গেয়ে মনের সুখে বৈঠা টানে মাঝি
আমাদের মাটিতে শুয়ে আছে শহীদ গাজী
এখানে হরেক ফলের রসে মিষ্টি করে মুখ
কাঁচা মাটির গন্ধে ভরায় সবার বুক ।
এখানে জন্মেছি তাই–
ধন্য ধন্য ধন্য সোনার জীবন
এই মাটিতেই হয় যেন সুখের মরণ ।
বাংলাধারা/এফএস/এএ













