ইয়াসির রাফা »
নানা অজুহাতে পার্কভিউ ও ম্যাক্স হাসপাতালে রোগী ভর্তিতে অনীহাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ উঠেছে মহানগর ছাত্রলীগের বেসরকারি হাসপাতাল চিকিৎসাসেবা মনিটরিং টীমের পক্ষ থেকে।
রবিবার (৭ জুন) সরেজমিনে দুই হাসপাতালেই চিকিৎসা কার্যক্রম ও রোগীদের আনাগোনা চলতে দেখা গেলেও বেশ কিছু অসঙ্গতির প্রমাণ মেলে। নগর ছাত্রলীগের অভিযোগ ছিল, কোন রোগী গেলে প্রথমেই সিট নেই বলে তাদের বিদায় করে দেয়ার চেষ্টা করে। এর মধ্যে ভিআইপি রেফারেন্সে কিছু ভর্তি নেয়। ভর্তির পরে টাকার বিশাল একটা চাপ দেয়। এছাড়াও রোগী ও তার স্বজনদের সিকিউরিটি গার্ড দ্বারা হয়রানির শিকার হতে হয় এমন অভিযোগও পাওয়া যায় তাদের পক্ষ থেকে।
এসকল ব্যাপার ও নগর ছাত্রলীগের অভিযোগের প্রসঙ্গে কথা বলার জন্য দুটি হাসপাতালের জিএম তালুকদার জিয়াউর রহমান শরীফ ও রঞ্জন প্রসাদ দাশগুপ্ত কাউকেই হাসপাতালে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে কারও কাছ থেকেই সাড়া পাওয়া যায়নি। দুটো হাসপাতালে কথা বলতে চাইলে এড়িয়ে গেছেন সবাই, পাওয়া যায়নি দায়িত্বশীল কাউকেই! বিলের নিয়ম কি জানতে চাইলে এই বিষয়ে মুখ খুলেনি কেউ।
ম্যাক্স হাসপাতালে শওকত নামের শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখাতে আসা এক রোগী বলেন, প্রায় এক ঘন্টা ধরে বসে থাকার পর সিরিয়াল দিয়ে ডাক্তার দেখিয়েছি। তবে যেটি খারাপ লেগেছে তা হলো এখানে প্রবেশ পথে রোগীদের জন্য তেমন সুরক্ষার ভাল কোন ব্যবস্থা নেই। যে পরিমাণ মানুষের আনাগোনা চলছে সে হিসাবে সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা দরকার।
পার্কভিউ হাসপাতালে আগত শফিক নামের এক রোগীর ভাই বলেন, আমার ভাইকে ভর্তি করানোর জন্য এসেছিলাম। কিন্তু হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট থেকে জানানো হয়েছে আগে টাকা পয়সার ব্যাপারে কথা বলে নিতে। এর পর রোগীকে দেখতে ডাক্তার আসবে।
এ প্রসঙ্গে নগর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর বলেন, আসলে এখন এমন একটি সময় চলছে যেখানে সবাইকে মানবিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা মনিটরিং করে আমরা যা দেখেছি তা তুলে ধরেছি। মানবিকভাবেই এখন যেখানে সবাইকে কাজ করতে হবে,সেখানে দায়িত্ব যারা এড়িয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতি প্রশাসনের কঠোর হতে হবে । গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বারবার এসব অভিযোগ আসলেও কেনো এসব সমস্যা সমাধান হচ্ছে না?
নগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সাব্বির সাকির বলেন, হাসপাতালগুলোতে করোনার জন্য আলাদা সেল গঠন করা হলেও মেক্স হাসপাতালে তেমন কোন ব্যবস্থা দেখা যায়নি। সাধারণ রোগীদের পাশে করোনা রোগীর বেড রাখাটা বিপজ্জনক। এসব ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিৎ। তিনি আরও জানান, ছাত্রলীগের চিকিৎসাসেবা মনিটরিং টিমের কাজ অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সিনিয়র ডেপুটি গভর্নর আমিনুল হক বাবু বলেন, করোনা পরিস্থিতি চট্টগ্রামে মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছেছে। এ অবস্থায় চিকিৎসা এবং করোনা টেস্টে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোকেও করোনা রুগীর চিকিৎসা দিতে হবে। প্রতিটি হাসপাতালের সামনে একটি করে বড় ব্যানার টানিয়ে দেয়া দরকার। যেখানে প্রাসাশন ও মনিটরিং টিমের নাম্বার দেয়া থাকবে। সেখান থেকে জনসাধারণেরা সরাসরি তাদের সমস্যার কথা জানাতে পারবে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতেও সুবিধা হবে। একই সাথে হাসপাতাল কর্তিপক্ষকেও এগিয়ে আসতে হবে। না হলে অবস্থা খারাপ থেকে আরও খারাপের দিকে যাবে।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম













