বাংলাধারা ডেস্ক »
অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের ভাগ্নে মো. মাহমুদুল হাসানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ডিআইজি মিজানের আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও হস্তান্তরে সহায়তায় দুদকের করা মামলায় মাহমুদুলকে অভিযুক্ত করা হয়। সকালে আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আসামি পক্ষে আইনজীবী রেজাউল করিম ও কাজী নজিবুল্লাহ হিরু শুনানি করেন।
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল ও জাহাঙ্গীর আলম জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে মাহমুদুলকে কারাগারে পাঠান।
মাহমুদুল হাসানের পক্ষে আইনজীবীরা বলেন, সম্পদ রয়েছে ডিআইজি মিজানের নামে, আসামি কীভাবে এ মামলায় অভিযুক্ত হয়। দুদকের মামলায় অভিযুক্ত করতে হলে আসামিকে নোটিশ করতে হয়, এখানে আসামিকে নোটিশ করা হয়নি। দুদককে মামলা করতে হলে নোটিশ করতে হবে। নোটিশ ছাড়া মামলা হয় না। তার নামেতো কোনও সম্পদ নেই। এরপর বিচারক কাঠগড়ায় দাঁড়ানো আসামিকে জিজ্ঞেস করেন ‘আপনার বেসিক কত?
তখন আসামি বলেন, ১৮ হাজার ৬০০ টাকা।’ বিচারক আবার বলেন, আপনার নিয়োগের আগেই তো দেখি ইনকাম ট্যাক্স দেওয়া হয়। তখন তার আইনজীবীরা বলেন, ‘চাকরিতে নিয়োগে পূর্বেই ব্যক্তিগত সম্পদের হিসাব দেখিয়ে তিনি ইনকাম ট্যাক্স দিতেন।’
রাষ্ট্রপক্ষে দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল শুনানিতে বলেন, ‘আসামির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের আইনে যে ধারায় অভিযোগ রয়েছে, সেই অভিযোগে সহায়তা করার অপরাধে এ মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।’ প্রসঙ্গত, গত ২৪ জুন ৩ কোটি ৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে মিজানের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
মামলায় মিজানুর রহমান, তাঁর স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগ্নে মাহমুদুল হাসানকে আসামি করা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, জ্ঞাত আয় বহির্ভূতভাবে সম্পদ অর্জন করে তা মিজান তার স্ত্রী, ছোটে ভাই ও ভাগ্নের নামে দেন। তার নিজের নামে ও স্বজনদেও নামে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বাড়ি, ফ্লাট ও অন্যান্য সম্পদ রয়েছে। ভাগ্নের নামেও ফ্লাট দেওয়া হয়েছে। ডিআইজি মিজানের অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহায়তা করার অভিযোগ রয়েছে ভাগ্নের বিরুদ্ধে।
ওই মামলার বর্নিত সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধানকালে দুদক কর্মকর্তাকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দেওয়ার কথা নিজে গণমাধ্যমে প্রকাশ করে নতুন করে আলোচনায় আসেন পুলিশের এই উর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
মিজান ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিয়ে গোপন করতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দ্বিতীয় স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা, এক সংবাদপাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগসহ বিভিন্নভাবে বিতর্কিত মিজান সম্প্রতি দুদক কর্মকর্তাকে ঘুষ দেওয়ার কথা প্রকাশ করার পর তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। গত ২৫ জুন তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর/এসবি /আর













