বাংলাধারা ডেস্ক »
বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের পাঁচ সদস্য, মানিকগঞ্জের দুজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং একজন ইউপি সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মাদ ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ দেয়া হয়েছে।
বাগেরহাটে বরখাস্ত হওয়া ইউপি সদস্যরা হলেন, নলধা-মৌভোগ ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য সরদার আলতাফ হোসেন, ফকিরহাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য আ. জব্বার, ফকিরহাট উপজেলার লখপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য তাসলিমা লতা, পিলজংগ ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য মোস্তফা কামাল হারুণ ও একই ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য সাধন কুমার দে।
মানিকগঞ্জে বরখাস্ত চেয়ারম্যানরা হলেন, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রাকিব হোসেন ফরহাদ, হরিরামপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন, এ ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. কামাল হোসেন।
এর মধ্যে বরখাস্ত হওয়া সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য তাসলিমা লতার তার মায়ের নামে দুটি বিধবা ভাতার বইয়ের মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাত করতেন বলে স্থানীয় তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের সুপারিশ অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
পিলজংগ ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোস্তফা কামাল হারুণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভাতার কার্ড দেয়ার নাম করে অর্থ আদায়, ঘর দেয়ার প্রতিশ্রুতি, জন্মনিবন্ধন করে দেয়ার নামে সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। যা স্থানীয় তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় জেলা প্রশাসকের সুপারিশ অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
নলধা-মৌভোগ ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সরদার আলতাফ হোসেন, ফকিরহাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুর জব্বার ও পিলজংগ ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সাধন কুমার দে’র বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দকৃত গভীর নলকূপ স্থাপনের জন্য সরকার নির্ধারিত সহায়ক চাঁদার অতিরিক্ত গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগটি স্থানীয় তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় জেলা প্রশাসকের সুপারিশ অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর রহমান জানান, ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত বিভিন্ন অভিযোগ স্থানীয় তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন-২০০৯ অনুযায়ী জেলা প্রশাসকের সুপারিশ অনুযায়ী স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় পাঁচ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন।
মানিকগঞ্জের ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বরখাস্তের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, হরিরামপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ঘর প্রদানের নামে অর্থ আদা্য়ের অভিযোগ রয়েছে। যা স্থানীয় তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় জেলা প্রশাসকের সুপারিশে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে গভীর নলকূপ বসানোর কথা বলে অর্থ আদায়ের অভিযোগ স্থানীয় তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় জেলা প্রশাসকের সুপারিশে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রাকিব হোসেন ফরহাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণে সরকারি বিধি অনুসরণ না করা, গৃহীত প্রকল্পের শতভাগ কাজ সম্পন্ন না করা, নিয়ম বহির্ভূতভাবে কাজের জন্য অগ্রিম অর্থ উত্তোলন এবং ভুয়া বিল ভাউচার দাখিলসহ কাজ না করে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। যা স্থানীয় তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় জেলা প্রশাসকের সুপারিশে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক ফৌজিয়া খান জানান, দুজন ইউপি চেয়ারম্যান ও একজন সদস্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত বিভিন্ন অভিযোগ স্থানীয়ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন-২০০৯ অনুযায়ী জেলা প্রশাসকের সুপারিশে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নযন ও সমবায় মন্ত্রণালয় তাদেরকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে। এ বিষয়ে আগামী দশ কার্যদিবসের মধ্যে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
বাংলাধারা/এফএস/এএ













