বাংলাধারা ডেস্ক »
মূলধন সংকটে বন্ধ হয়ে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক ব্যাংক সিলিকন ভ্যালি (এসভিবি) কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করলেন টেসলা মোটরসের সিইও এবং টুইটার প্রধান ইলন মাস্ক।
শনিবার (১১ মার্চ) টুইটারে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ আগ্রহ প্রকাশ করেন।
প্রযুক্তিনির্ভর নতুন কোম্পানি প্রতিষ্ঠায় ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ব্যাংক হিসেবে পরিচিত ছিল এসভিবি। শুক্রবার (১০ মার্চ) ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়েছে ফেডারেল ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স করপোরেশন (এফডিআইসি)। আর এই বিপর্যয়ে ইলনকে ব্যাংকটি কেনার পরামর্শ দেন গেমিং ডিভাইস প্রতিষ্ঠান রেজারের সিইও মিন-লিয়াং তান।
এক টুইটে তিনি ইলনকে এসভিবি কেনার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি এটিকে ডিজিটাল ব্যাংকে পরিণত করার বিষয়টিও বিবেচনা করতে বলেন। প্রতিক্রিয়ায় ইলন বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে আলোচনার জন্য উন্মুক্ত আছি।’
এসভিবির কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ায় ২০০৮ সালের পর ব্যাংক খাতে দ্বিতীয় বড় বিপর্যয় দেখল যুক্তরাষ্ট্র। আর এই খবরে হতাশা নেমে এসেছে শিল্পকারখানায়। এ পরিস্থিতিতে ব্যাংকে জমা করা অর্থের কী হবে, তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন অনেক আমানতকারী ও প্রতিষ্ঠান। তবে এফডিআইসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ব্যাংকের সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারী বা পাওনাদারদের অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা করা হবে। এসভিবির বীমাকৃত আমানত রক্ষা করবে ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স ন্যাশনাল ব্যাংক অব সান্তা ক্লারা।
অর্থনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এসভিবির গ্রাহকরা অজানা আতঙ্কে নিমজ্জিত হয়েছেন। এ ব্যর্থতার জের হিসেবে অচিরেই আরও কয়েকটি ব্যাংকে তালা ঝুলতে পারে। ২০০৮ সালে মন্দার সময় এমন নাজুক পরিস্থিতির শিকার হয়েছিল আরও কয়েকটি ব্যাংক। সেটি ছিল আর্থিক ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের ব্যর্থতার প্রথম ঘটনা।
৪০ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে কাজ করে আসছিল এসভিবি। গত বছরের শেষার্ধে এর সম্পদের পরিমাণ ছিল ২০৯ বিলিয়ন ডলার এবং আমানত ছিল ১৭৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের। শুক্রবার এটি দেউলিয়া হওয়ার প্রাক্কালে বিক্রির উদ্যোগ নিলে একজন ক্রেতাও এগিয়ে আসেননি। আর এ অবস্থার প্রভাব পড়েছে শেয়ার মার্কেটে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, শুক্রবার ব্যাংকের গ্রাহকরা ডলার ওঠাতে গিয়ে জানতে পারেন এসভিবির কোষাগারে অর্থ নেই। অথচ এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রে ১৬তম বৃহত্তম ব্যাংক।
সিএনএন জানায়, এসভিবির চাকা ঘোরা বন্ধ হতে থাকে বুধবার। এদিন ব্যাংক এক ঘোষণায় জানায়, কিছু সম্পদ বিক্রি করে তাদের ১৮০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে। ব্যালেন্স শিট শক্তিশালী করতে ২২৫ কোটি ডলারের নতুন শেয়ার বিক্রি করবে তারা।
ওই ঘোষণার পর প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ তুলে নেয় তারা। এতে এসভিবি ফাইন্যান্সিয়াল গ্রুপের শেয়ারের দাম ৬০ শতাংশ পড়ে যায়। ফলে দুই দিনে দরপতন হয় ৮৪ শতাংশ।













