বাংলাধারা ডেস্ক »
দীর্ঘ আইনি জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে ১০৪দিন পরে ভারতে ফিরলেন বাংলাদেশে আটকে থাকা ১৩৫জন ভারতীয় জেলে। শনিবার ভারতীয় সময় ভোর ৪টা ৩০ মিনিটের দিকে দু’দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর তত্ত্বাবধানে ৮টি ভারতীয় ফিশিং ট্রলারসহ ১৩৫ জন জেলে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ও ময়নাপাড়ার ঘাটে এসে পৌঁছায়। এ সময় দীর্ঘদিন পর নিজ দেশে পৌঁছাতে পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন জেলেরা।
জানা যায়, চলতি বছরের ২৬ জুন আচমকা সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠলে ৮টি ফিশিং ট্রলারে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় প্রবেশ করে এই ১৩৫ জন ভারতীয় জেলে। এ সময় তাদের উদ্ধার করে আটক করে বাংলাদেশি উপকূল রক্ষী বাহিনী। ফলে বাংলাদেশের আইনি মারপ্যাঁচে আটকে যায় তাদের দ্রুত দেশে ফেরার পক্রিয়া।
অবশেষে তিন মাসের বেশি কারাভোগের পর ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এবং ভারতের ফিশারম্যান ওয়েলফেয়ার সংস্থার সহযোগিতায় আজ তারা দেশে ফেরেন। চলমান উৎসবের মরশুমের মধ্যে বাংলাদেশে আটক থাকা এই জেলেরা ঘরে ফেরায় খুশি তাদের পরিবার ও গ্রামবাসী।
যদিও এই ঘটনার মাত্র কিছুদিন ব্যবধানে গত আগস্টে হঠাৎ সামুদ্র উত্তাল হয়ে উঠলে বাংলাদেশি একাধিক ট্রলার ডুবে যায়। বাংলাদেশ সরকারের বিশেষ অনুরোধে এ সময় উদ্ধার অভিযান চালায় ভারতীয় উপকূল রক্ষী বাহিনী। উদ্ধার অভিযানে ভারতীয় জলসীমা থেকে উদ্ধার করা হয় সমুদ্রে ভাসতে থাকা ১১৯ জন বাংলাদেশি জেলেকে। কোনোরকম আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই দুই ধাপে ২৪ ঘণ্টা থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাদের বাংলাদেশ সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া তাদের উদ্ধারের পর উন্নত চিকিৎসা, খাদ্য, পোশাক দেওয়ার পাশাপাশি রাখা হয় বিভিন্ন সাইক্লোন সেন্টার ও গেস্ট হাউসে। অন্যদিকে প্রায় একইরকমভাবে বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করায় ভারতীয় জেলেদের ফেরত না পাঠিয়ে বরং তিন মাসের বেশি আটক করে রাখা হয়। এই ব্যাপারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতীয় মৎস্যজীবী সংগঠনগুলি। যদিও জেলেদের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করায় বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কাকদ্বীপ ফিশারম্যান ওয়েলফেয়ার সোসাইটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বাবুল দাস।
এদিকে দেশে ফেরার পর জেলেরা অভিযোগ করেছেন, তাদের সঙ্গে পাচারকারীদের মতো ব্যবহার করেছেন বাংলাদেশের উপকূলরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা। মারধরের পাশাপাশি কেড়ে নেওয়া হয় তাদের কাছে থাকা নগদ অর্থ, জিপিএস জিভাইস, মোবাইল। লুটপাট করা হয় ট্রলারে। বাজেয়াপ্ত করার কথা বলা হলেও কোনো সিজার লিস্টও দেওয়া হয়নি তাদের। দেশে পাঠানোর সময়ও ওসব জিনিস ফেরত দেওয়া হয়নি তাদের। সূত্র : সমকাল