চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কর্ণফুলী টানেল চত্বরে দ্রুতগামী বাসচাপায় মোহাম্মদ সোহেল (৪০) নামে এক মাইক্রোবাস চালক নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সোহেল উপজেলার বারশত ইউনিয়নের কালিবাড়ী এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে। তিনি পেশায় মাইক্রোবাস চালক ছিলেন এবং বৈরাগ এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টানেল মোড়ে রাজনৈতিক ব্যানার-ফেস্টুন ও সাইনবোর্ডের কারণে দৃশ্যমানতা কম থাকায় হঠাৎ আসা বাসটি সোহেল দেখতে পাননি। এতে বাসচাপায় তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে আনোয়ারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলেও চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
দুর্ঘটনার পর বাস নিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে শাহ আমানত সেতুর টোল প্লাজা থেকে চালক কবির হোসেন (৪২) ও সহকারী সাগর আহমদ (২২) কে আটক করে পুলিশ। কবিরের বাড়ি জামালপুরে এবং সাগরের বাড়ি টাঙ্গাইলে।
খবর ছড়িয়ে পড়লে রাতেই মইজ্জারটেক চত্বরে স্থানীয় চালক ও যাত্রীরা বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ আটককৃতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
নিহতের শ্যালক মোহাম্মদ আরিফ বলেন, “আমার বোনজামাই গাড়ি রেখে টানেল চত্ত্বর থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হন।”
আনোয়ারা কার-মাইক্রোবাস শ্রমিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম অভিযোগ করে বলেন, “বাসটি নিয়ম মেনে গোলচত্বর ঘুরলে এ দুর্ঘটনা ঘটত না। চালক ও সহকারীর অবহেলাই সোহেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী।”
আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহতাবউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।”
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন জানান, “ঘটনার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে যাই। বাসচালক ও সহকারীকে আটক করেছি। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর কর্ণফুলী টানেল উদ্বোধনের পর থেকে ভেতরে-বাইরে এ পর্যন্ত ১১টি দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত হয়েছেন। সর্বশেষ গত ২৪ জুন টানেলের পতেঙ্গা প্রান্তে একটি মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় ৩ জন আহত হয়েছিলেন।