৮ ডিসেম্বর ২০২৫

ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামি আ.লীগ নেতা জাহেদুল হক

নগরীর চিটাগাং ক্লাবে আওয়ামী লীগ নেতার ছেলের বিয়েতে ছাত্রদের হানা, উত্তপ্ত মধ্যরাত

চট্টগ্রাম নগরীর অভিজাত চিটাগাং ক্লাবে এক আওয়ামী লীগ নেতার ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে ছাত্রদের বিক্ষোভে রাতভর চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। অভিযোগ রয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাসহ অন্তত ১২টি মামলার পলাতক আসামি ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা জাহেদুল হক ছেলের বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন।

বোয়ালখালীর সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের পরিচালক জাহেদুল হকের ছেলের বিবাহ অনুষ্ঠান শুক্রবার (৫ জুলাই) দিবাগত রাতে অনুষ্ঠিত হয়। রাত ১১টার পর থেকেই শতাধিক শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন খালেদ রোডে জড়ো হয়ে অনুষ্ঠান ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করে। আন্দোলনকারীদের দাবি, পলাতক আসামি হয়েও প্রশাসনের সহযোগিতায় জাহেদুল হক দিব্যি ছেলের বিয়েতে অংশ নেন।

আন্দোলনকারীরা জানান, অনুষ্ঠানে একজন বিচারক ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) তিনজন উপ-কমিশনার অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এমনকি ছাত্রদের অভিযোগ, পুলিশি পাহারায় জাহেদুল হককে চিটাগাং ক্লাবের ‘গেস্ট রুমে’ লুকিয়ে রাখা হয় এবং পরে পেছনের দরজা দিয়ে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন বলেন, “আমাদের কাছে জাহেদুল হকের ক্লাবে উপস্থিতির একাধিক প্রমাণ রয়েছে। একজন খুনের মামলার আসামি কীভাবে খোলামেলা বিয়ের আয়োজন করেন, সেটাই আমাদের প্রশ্ন।”

ঘটনার খবর পেয়ে কোতোয়ালী থানার ওসি আব্দুল করিমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ক্লাবে প্রবেশ করে। বাইরে অবস্থান নেওয়া ছাত্রজনতা ক্লাব চত্বর ঘিরে রেখে প্রতিটি গাড়িতে তল্লাশি চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনা সদস্যদেরও আশপাশে সতর্ক অবস্থানে দেখা যায়।

চিটাগাং ক্লাবের বর্তমান চেয়ারম্যান শোভন এম শাহাবুদ্দিন রাজ, যিনি আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের স্বামী, বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ছাত্ররা স্লোগান দেন-“অপরাধী ধামাচাপা নয়, বিচার চাই,বিচার চাই!” তারা দাবি করেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের সহযোগিতায় অপরাধীরা আজও আইনের আওতার বাইরে থাকছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জাহেদুল হক বোয়ালখালী থেকে নির্বাচিত হন। তবে রাজনৈতিক পালাবদলের পর তিনি পদচ্যুত হন এবং ছাত্র আন্দোলনে জড়িত এক শিক্ষার্থীর চোখ হারানোর ঘটনায় দায়ের করা মামলার অন্যতম আসামি হন।

এআরই/বাংলাধারা

আরও পড়ুন