বাংলাধারা ডেস্ক »
নববর্ষবরণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে চট্টগ্রাম। এবার চট্টগ্রাম নগরীতে পৃথক চারটি মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।
নতুন বঙ্গাব্দ ১৪৩০-কে বরণ করতে পৃথক মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করছে জেলা শিল্পকলা একাডেমি, সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদ, নববর্ষ উদযাপন পরিষদ, চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম চারুকলার প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন চট্টগ্রাম চারুশিল্পী সম্মেলন।
শিল্পকলার বর্ষবরণের মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হবে সকাল নয়টায়। এতে অংশগ্রহণ করবেন জেলা প্রশাসকসহ জেলা শিল্পকলা একাডেমি, শিশু একাডেমি এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। চট্টগ্রাম চারুকলার প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রা চট্টেশ্বরী মোড় থেকে বের হয়ে ডিসি হিলের সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে। ভোর সাড়ে ছয়টায় সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদ মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করবে। এছাড়া সিআরবি শিরীষতলায় নববর্ষ উদযাপন পরিষদের বর্ষবিদায়-বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আজ উদ্বোধন হবে।
আগামীকাল শুক্রবার বরণ করা হবে ১৪৩০ বঙ্গাব্দকে। দিনটিকে বরণ করতে পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রার উপকরণ তৈরিতে ব্যস্ত জেলা শিল্পকলা একাডেমি। শিল্পকলায় গিয়ে দেখা যায় রঙের ছোঁয়ায় মাটির সরা, হার্ডবোর্ডে নানারকম ছবি আঁকছেন শিক্ষার্থীরা। তৈরি করছেন বাঘ, হাতি, ঘোড়া, রাজা-রাণী, খড়গোশ, মোরগ, পেঁচা, পুতুল, বক, পাখা ও অসংখ্য মুখোশ। এবার বর্ষবরণের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি নিয়ে শিল্পকলা প্রাঙ্গণে কাজ করছে চারুকলার প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠনটিও।
চারুশিল্পীদের সংগঠন চট্টগ্রাম চারুশিল্পী সম্মিলনের সাংগঠনিক সহসভাপতি বিজন মজুমদার বলেন, করোনার কারণে গত দুই বছর বন্ধ ছিল। এবার চারুকলা ইনস্টিটিউট বন্ধ ঘোষণার কারণে মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনে সেখানে কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। তাই আমরা ঐতিহ্য রক্ষায় এই মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজন করেছি।
বর্ষবরণের প্রস্তুতি নিয়ে শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার মোসলেম উদ্দিন শিকদার বলেন, নতুন বছরকে বরণ করতে মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা শিল্পকলা একাডেমি। শুক্রবার সকাল ৯টায় শিল্পকলা একাডেমি থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়ে নগরীর ওয়াসার মোড় হয়ে আবার শিল্পকলায় শেষ হবে। বর্ষবরণের এ আয়োজন জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদের আয়োজনে চট্টগ্রাম ডিসি হিলের নজরুল স্কয়ার প্রাঙ্গণে প্রতিবারের মত এবারও বাঙালির প্রধান উৎসব ‘বৈশাখী উৎসব’ পালনের কর্মসূচি ও প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। শুক্রবার ভোর সাড়ে ছয়টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বর্ষবরণের ‘বৈশাখী উৎসব’ অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য, অন্যান্য বছর বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকলেও গত বছরের মত এবারও রমজানের জন্য শুধুমাত্র ১লা বৈশাখে বর্ষবরণ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এবারও কর্মসূচিতে থাকছে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন। এরপর নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো…’ সঙ্গীত পরিবেশনা। এরপর পরিবেশিত হবে চট্টগ্রামের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক দল ও সংগঠনসমূহের দলীয় সংগীত, দলীয় নৃত্য ও দলীয় আবৃত্তি পরিবেশনা।
আজ বিকাল ৪টায় শিরীষতলা মঞ্চে বেলুন উড়িয়ে ১৪২৯ বঙ্গাব্দের বিদায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন নববর্ষ উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক। এ সময় নববর্ষ উদযাপন পরিষদ, চট্টগ্রামের নির্বাহী কমিটি ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। শুক্রবার বৈশাখের অনুষ্ঠান শুরু হবে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে। প্রথম পর্বের অনুষ্ঠান চলবে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান শুরু হবে বেলা ২টা থেকে।