৫ নভেম্বর ২০২৫

‘নিহত ১০ জনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন মিলেনি’

কক্সবাজার প্রতিনিধি »

কক্সবাজারের নাজিরারটেক উপকূলে ট্রলার থেকে ১০ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় সন্দেহভাজন আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও র‌্যাব। এ ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। গ্রেফতারের মধ্যে প্রথম দুজনকে আদালতরে আদেশে আসামি ৫ দিন করে রিমান্ডে রয়েছে।

অপরদিকে, মঙ্গলবার রাতে মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোমের খাল থেকে একটি মরদেহ (কংকাল) উদ্ধার হয়েছে। সেই কংকালটি নিহতদের সাথে গিয়ে নিখোঁজ থাকা অপর জেলের বলে ধারণা করছেন পুলিশ।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম জানান, ১০ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় বুধবার (২৬ এপ্রিল) দিনগত রাতে প্রযুক্তিগত সহায়তায় চকরিয়ার বদরখালী এলাকা থেকে গিয়াস উদ্দিন মুনির (৩২) নামের আরো এক সন্দেভাজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মুনির বদরখালী এলাকায় মো. নুর নবীর ছেলে। তাকে ইতোমধ্যে আদালতে পাঠিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি।

বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনায় সন্দেহজনক ২ জনকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে র‌্যাব। এমনটি জানিয়ে এসপি বলেন, বাঁশখালীর কুদুকখালী থেকে আটক দু’জনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। এদেরও গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

র‌্যাবের হাতে আটকরা হলেন, বাঁশখালীর কুদুকখালী এলাকার মৃত সিরাজুল হকের ছেলে ফজল কাদের মাঝি (৩০) ও শামসুল আলমের ছেলে আবু তৈয়ব মাঝি (৩২)।

পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোমের খাল থেকে মানুষের একটি কংকাল উদ্ধার করা হয়। কংকালটি দশ মরদেহ উদ্ধার ঘটনায় নিখোঁজ জেলেদের একজনের বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১০ জনের পাশাপাশি এই কংকালের ডিএনএ নমুনাও সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাবে।

ইতোমধ্যে ১০ মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার কথা স্বীকার করে পুলিশ সুপার বলেন, নিহতদের কারও শরীরে গুলি বা অন্য কোন আঘাতের চিহ্ন মিলেনি। ফলে এদের হাত-পা বেঁধে হিমঘরে আটকে হত্যার বিষয়টি অনেকটা পরিষ্কার।

এসপি জানান, আদালতের আদেশে মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি মাতারবাড়ির এলাকার ট্রলার মালিক বাইট্টা কামাল ও ৪ নম্বর আসামি ট্রলার মাঝি নুরুল করিম ওরফে করিম সিকদার রিমান্ডে রয়েছে। এদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। এসব সূত্র ধরে চলছে তদন্ত।

পুলিশ এ ঘটনায় কয়েকটি উৎসকে সামনে রেখে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে জানিয়েছে এসপি মাহফুজুল আরো জানান, দ্রুত সময়ের মাঝে এ হত্যাকান্ডের মুল কারণ জানা সম্ভব হতে পারে।

রোববার (২৩ এপ্রিল) গুরা মিয়া নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধিন একটি ট্রলার সাগরে ভাসমান থাকা ট্রলারটি নাজিরারটেক উপকূলে নিয়ে আসে। আর ওই ট্রলারের হিমঘরে হাত-পা বাঁধা ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ট্রলারটির মালিক মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিয়নের হরিয়ারছড়া এলাকার ছনখোলা পাড়ার সামশুল আলম প্রকাশ সামশু মাঝি। যার মরদেহ গ্রহণ করেছেন তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম। ইতিমধ্যে দায়ের হওয়া মামলার বাদিও তিনি। রোকেয়া বেগমও স্বীকার করেছেন ট্রলারটি মালিক তার স্বামী।

উদ্ধার হওয়া মরদেহের মাঝে ইতিমধ্যে ৬ জনের দেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করলেও মর্গে রয়ে গেছে ৪ জনের মরদেহ ও কংকালটি। ডিএনএ পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে এ ৫ জনের পরিচয়।

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ