৮ ডিসেম্বর ২০২৫

নুসরাত হত্যায় আসামিদের সম্পৃক্ততার ভিডিও দেখানো হলো আদালতকে

বাংলাধারা ডেস্ক »

ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যায় আসামিদের সম্পৃক্ততার ভিডিও প্রদর্শন করেন মামলার সর্বশেষ-৯২ নম্বর সাক্ষী ও তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভিস্টিগেশনের (পিবিআই) ফেনী শাখার পরিদর্শক মো. শাহ আলম।

মঙ্গলবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশীদের আদালতে চতুর্থ দিনের মতো সাক্ষ্য দেন ও এ ভিডিও দেখান তিনি। হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার ৩৮তম দিবসের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।

বাংলাদেশে কোনো মামলার ইতিহাসে এটিই সর্বপ্রথম; যেখানে ডিজিটাল পদ্ধতিতে হত্যাকাণ্ডের সকল বিষয়াদি দেখানো হলো।

এদিন নুসরাত হত্যায় আসামিদের সম্পৃত্ততার অডিও, নুসরাতের জবানবন্দির ভিডিও কম্পিউটারে পাওয়ায় পয়েন্টের মাধ্যমে আদালতের সামনে তুলে ধরেন পিবিআইয়ের পরিদর্শক (ফেনী শাখা) মো. শাহ আলম। পরে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন। জেরা চলাকালীন সময় শেষ হয়ে গেলে আগামীকাল বুধবার পুনরায় তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত।

এর আগে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশীদের আদালতে গত বুধবার, রোববার ও গতকাল সোমবার মামলার সাক্ষ্য দেন শাহ আলম। গত রোববার নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যায় আসামিরা কীভাবে সম্পৃক্ত ছিল তা ভিডিওর মাধ্যমে দেখাতে আদালতের কাছে আবেদন করেন তিনি। আদালত তা গ্রহণ করে অনুমতি প্রদান করেন।

বাদি পক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজু জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহ আলমের জবানবন্দি শেষে নুসরাত হত্যা মামলার আগে-পরে আসামিরা হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়ে যে উল্লাস করেছে তা, তাদের কথোপকথন ও নুসরাতের জবানবন্দির ভিডিও পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে বিচারককে দেখানো হয়। আগামীকাল পুনরায় শুনানি গ্রহণ করবেন আদালত।

আসামি পক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মদ বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামীপক্ষ মামলার সাক্ষ্য আইনের বিধান অমান্য করে তারা ডিজিটাল পদ্ধতি ভিডিও দেখিয়েছে।’

হত্যার রহস্য উদঘাটনে আদালতে ভিডিও প্রজেক্টের অনুমতি দেওয়ায় রাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নিহত নুসরাতের ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান।

এর আগে গত ২৭ জুন মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। নুসরাতের ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান, নুসরাতের মা শিরিন আখতার ও বাবা মাওলানা একেএম মুসাসহ ৯১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়।

চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১০ এপ্রিল মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।

বাংলাধারা/এফএস/এমআর/এসবি

আরও পড়ুন