চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর নতুন কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহত ও অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের কারণে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে, বন্ধ রয়েছে দোকানপাট, আর জনমনে বিরাজ করছে আতঙ্ক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ মার্চ বিকেলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মিরসরাই উপজেলা, মিরসরাই পৌরসভা ও বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু এই কমিটিতে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও ঝাড়ু মিছিল করে প্রতিবাদ জানান। এমনকি পরদিন সকালেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা।
নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব থেকেই সংঘর্ষ
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, বিএনপির উত্তর জেলা কমিটির দুই নেতা নুরুল আমিন ও আমিন চেয়ারম্যানের অনুসারীদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন অভিযোগ করেন, “কমিটিতে পদ না পাওয়ার ক্ষোভ থেকে এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে আমিন চেয়ারম্যানের অনুসারীরা সংঘর্ষ সৃষ্টি করেছে। এতে দলের একজন কর্মী নিহত হয়েছেন।”
তবে এ অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন আমিন চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “এই সংঘর্ষের সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।”
১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বিএনপি কর্মীদের বিক্ষোভ
সংঘর্ষ থামাতে প্রশাসন দ্রুত হস্তক্ষেপ করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মিরসরাইয়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। তবে বিএনপি কর্মীরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিক্ষোভ মিছিল অব্যাহত রাখে।
এ অবস্থায় ঈদের আগে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে, সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে।
নেতাদের নীরবতা ও প্রশাসনের কঠোর অবস্থান
সংঘর্ষ ও সহিংসতার বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, তারা কঠোর অবস্থানে রয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এআরই/বাংলাধারা