পটিয়া প্রতিনিধি »
চট্টগ্রাম পটিয়ায় চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রায় তিন মাস ধরে গৃহবন্দী সাধারণ মানুষ। আয়-রোজগার কমে যাওয়ার পাশাপাশি আনুষাঙ্গিক খরচ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। ফলে কেউ কেউ বাসা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন গ্রামের দিকে। এতে প্রতিদিন খালি হচ্ছে কোনো না কোনো বাসা।
অন্যদিকে, খালি হওয়া এই বাসাগুলো আর ভাড়া হচ্ছে না সহজে। একে তো বাসা খালি, আবার দিতে হচ্ছে গ্যাস বিল ও মিনিমাম বিদুৎ বিল। এ নিয়ে কঠিন সমস্যায় পড়েছেন বাড়িওয়ালারা। করোনা পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলও বাড়িওয়ালাদের ঘাড়ে।
সরেজমিনে দেখা যায় পৌরসভা মুন্সেফ বাজার, কালী বাড়ীর পাশের গলিতে প্রায় বেশ কিছু বাসা খালি হয়ে গেছে এছাড়াও পৌরসভা একতা আবাসিক, পটিয়া আবাসিক, মুন্সেফ বাজারের দক্ষিণ পার্শ্বে, বৈলতলী রোড, বাসষ্টেশনসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশকিছু বাড়ি ও গলির মুখে ঝুলানো আছে, ‘ফ্ল্যাট ফাঁকা আছে’ ভাড়াটিয়া চেয়ে ‘টু-লেট’ বা ‘বাড়ি ভাড়া দেওয়া হবে’ এ ধরনের লেখা।
এছাড়াও দেখা গেছে, সেমিপাকা ঘর গুলোও ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। তবে এ ধরনের বিজ্ঞাপন দিয়েও ভাড়াটিয়া পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পটিয়া মুন্সেফ বাজার এলাকার একজন বাড়ির কেয়ারটেকার।
তিনি বলেন, তিনি বলেন তাদের মালিকের সেমিপাকা এবং ফ্ল্যাট মিলিয়ে তার ৫ টি বাসার মধ্যে ৩ টি বাসায় ভাড়াটিয়া আছে। বাকি বাসাগুলো খালি পড়ে আছে ২ মাস ধরে। ভাড়াটিয়া পাওয়া যাচ্ছে না সহসা।অন্যান্য সময়ে বাসা খালি হলেও এতদিন ভাড়া না হয়ে থাকেনি।
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা চট্টগ্রাম পটিয়ায় বসবাস করছে এমন অনেক মানুষ। যার বেশিরভাগই নিম্ন আয়ের মানুষ। মাসিক বা দৈনিক আয়ের উপর ভিত্তি করে জীবনযাপন করন অনেকে। অন্যদিকে পটিয়ার স্থানীয় বাসিন্দাদের বেশিরভাগেরই আয়ের একমাত্র উৎস বাসা ভাড়া থেকে প্রাপ্ত অর্থ।
বাসা ভাড়া না হলে তাদের আয়ের পথও বন্ধ হয়ে যায়। করোনা পরিস্থিতিতে কেউ কেউ ভাড়া কমিয়ে দিয়েও ভাড়াটিয়া পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন অনেক বাড়িওয়ালা।
পটিয়া পৌরসভা এলাকার বাড়িওয়ালা নাসির উদ্দিন বলেন, আমার ১২টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ৫টি খালি আছে। বাকি ৭টিতে ভাড়াটিয়া থাকলেও গত তিন মাস ধরে তাদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া পাই। আগের চেয়ে প্রতিটি ফ্ল্যাট প্রতি এক থেকে দুই হাজার টাকা ভাড়া কমিয়ে ভাড়াটিয়া পাওয়া যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতে প্রতি ফ্ল্যাটের বিপরীতে গ্যাস বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই ফ্ল্যাটগুলোর ভাড়া থেকেই আমার সব ধরনের খরচ বহন করতে হয়। এ অবস্থায় আমার পক্ষে জীবনযাপন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকারিভাবে যদি করোনাকালীন এই সময়ে খালি বাসাগুলোর গ্যাস বিল মওকুফ করা হতো তাহলে কষ্ট কিছুটা লাঘব হতো। গত তিন মাসের বিদুৎ বিল এসেছে আগের ছেয়ে দু-গুন বেশি।
প্রায় বাড়িওয়ালাদের কথা যে সমস্ত বাড়িওয়ালাকে বাড়ি ভাড়ার উপর নির্ভর করতে হয়, শুধুমাত্র তাদের জন্য করোনাকালীন সময়ে গ্যাস বিল ও বিদুৎ বিল এবং আনুষাঙ্গিক খরচ মওকুফ করার বিষয়টি ভেবে দেখা প্রোয়েজন সংশ্লিষ্টদের।













