২৩ অক্টোবর ২০২৫

পটিয়ায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু

বাংলাধারা ডেস্ক »

চট্টগ্রামের পটিয়ায় জেরিন আকতার (২২) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের শেখ মোহাম্মদ পাড়ার নিজ ঘর থেকে গলায় রশি পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার পর থেকেই মৃত গৃহবধূর প্রবাসী স্বামী দিদারুল আলমসহ পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ছনহরা ইউনিয়নের আলামদার পাড়ার মটপাড়া গ্রামের আমির আলামদারের বড় মেয়ে জেরিন আকতারে বিয়ে হয় একই উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের শেখ মোহাম্মদ পাড়ার মৃত সালামত আলী খানের দুবাই প্রবাসী ছেলে দিদারুল আলমের সাথে ২০২০ সালের মার্চে। রবিবার বাড়ির ছোট ছেলে-মেয়েরা সন্ধ্যায় ঘরের জানালা দিয়ে দেখতে পান গৃহবধূ জেরিন আকতারের ঝুলন্ত লাশ। এসময় তারা চিৎকার চেচামেচি করলে আশপাশের লোকজন এসে দ্রুত রশিতে ঝুলানো অবস্থায় গৃহবধূ জেরিন আকতারকে নিচে নামান।

এদিকে রাত দশটার সময় পটিয়া থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করছেন ওসি প্রিটন সরকার, পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম, উপপরিদর্শক বিভাস কুমার সাহাসহ পুলিশের একটি দল। এসময় তারা লাশটির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দেন।

তবে নিহত গৃহবধূর মা জেসমিন আকতার অভিযোগ করে বলেন, আত্মহত্যা নয় আমার মেয়ে জেরিন আকতারকে তার স্বামীসহ পরিবারের লোকজন মেরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমার মেয়েকে অনেক আগে থেকেই মানসিকভাবে নানা নির্যাতন করতেন তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। আমি আমার মেয়েকে বিভিন্নভাবে সান্তনা দিতাম। তার একটি ২ বছর বয়সী ছেলে সন্তান রয়েছে। তার দিকে তাকিয়ে হলেও যে সব সহ্য করে নেয়।

এদিকে নিহত গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানা যায়, যেহেতু করোনাকালীন বিধিনিষেধের সময় তাদের বিয়ে হয়েছিল তখন সামাজিকভাবে অনুষ্ঠান করা হয়নি। তখন কথা ছিল পরবর্তী সময়ের যে কোনো দিন বেয়াই ভাতা স্বরুপ বরপক্ষের লোকজনকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়ানো হবে। এ নিয়ে তাদের মেয়েকে বিভিন্ন সময় শ্বশুর বাড়ির লোকজন জ্বালাতন করতেন। ৬ এপ্রিল স্বামী দিদারুল আলম দুবাই থেকে দেশে আসলে সে নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। ১৭ মে স্বামী আবারো বিদেশে ফিরে যাওয়ার কথা। তাই তার আগেই সেই দাওয়াত খাওয়াতে চাপ সৃষ্টি করে গৃহবধূর পরিবারকে। তারা তাদের কথা মতো আগামী ১৪ মে তাদের বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ার দিনক্ষণ ঠিক করেন। কিন্তু তার আগেই তাদের মেয়েকে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠে।

মৃত গৃহবধূ জেরিন আকতার উপজেলার সালেহ নুর ডিগ্রী কলেজের ডিগ্রী ফাইনাল বর্ষের ছাত্রী বলে জানা গেছে।

পটিয়া থানার ওসি প্রিটন সরকার বলেন, রাতেই ঘটনাস্থল থেকে লাশটির সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। লাশটির ময়নাতদন্তের জন্য রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর বলা যাবে এটি কি হত্যা নাকি আত্মহত্যা। নিহতের পরিবারের কেউ এ ব্যাপারে অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন