কাউছার আলম, পটিয়া »
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশের স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। জেব্রা ক্রসিং না থাকায় মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী এলাকায় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষার্থী প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন লেখাপড়া করতে যাচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে।
ব্যস্ততম এই মহাসড়ক পেরিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া নিয়ে অভিভাবক মহল সদা উদ্বিগ্ন থাকলেও প্রশাসন এ ব্যাপারে নির্বিকার।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহসড়কে গত ৫ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী প্রাণ হারিয়েছেন আর এর মধ্যে আহত হয়েছেন পাঁচ শতাধিকের বেশি শিক্ষার্থী।
গত মাসে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে মহাসড়ক পাড় হতে গিয়ে পটিয়া রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রবিউল (১৩) কার্ভাডভ্যানের চাপায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন। কুসুমপুরা উচ্চ বিদালয়ের নবম শ্রেনীর ছাত্রী আকলিাম স্কুলে শেষে বাড়ি ফেরার পথে ট্টাক চাপায় মহাসড়কেই প্রাণ হারান।
শুধু রবিউল কিংবা আকলিমা নন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে চলচলরত সময়ে প্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় শিকার হয়ে অনেক শিক্ষার্থী মারা যায়। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মহাসড়কের কুসুমপুরা উচ্চ বিদ্যালয়, চিটাগাং আইডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়, এয়াকুবদন্ডী পাইরুল উচ্চ বিদ্যালয়, পাইরুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লড়িহরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মনসা স্কুল এন্ড কলেজ, ইউনিয়ন কৃষি উচ্চ বিদ্যালয়, হলি চাইল্ড কিন্ডার গার্টেন, রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয়, পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, পটিয়া সরকারি কলেজ, পটিয়া স্কুল এন্ড কলেজ, এস আলম কলেজিয়েট স্কুল এন্ড কলেজ, এ জে চৌধুরী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, এজে চৌধুরী কর্ণফুলী ডিগ্রি কলেজ, মোজাফ্ফরাবাদ ডিগ্রি কলেজ,মোজাফ্ফরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়, মোজাফ্ফরাবাদ সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়, চক্রশালা কৃষি উচ্চ বিদ্যালয়, হযরত শাহ চান্দ আওলিয়া মাদ্রাসা, ঐতিহ্যবাহী পটিয়া মাদ্রাসা সহ প্রায় অর্ধ শতাধিক বিদ্যালয়ের সামনে সড়ক পারাপারের জন্য নেই কোনো জেব্রা ক্রসিং কিংবা গতি নিয়ন্ত্রক। এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্মাণ করা হয়নি কোন ফুটওভার ব্রীজও। এত শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। সেখানে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে গাইডম্যানও রাখা হয়নি ।
পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. আলমগীর হোসেন বাংলাধারাকে বলেন, জেব্রা ক্রসিং না থাকায় দ্রত ও বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর কারণে দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী শাহ চান্দ আওলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোক্তার আহমদ বলেন, মহাসড়কে জেব্র ক্রসিং দেয়া হলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশেই রোধ করা সম্ভব।

চক্রশালা কৃষি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শাহানা সুলতানা বলেন, গতি নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কিংবা জেব্রা ক্রসিং দেয়া যদি সম্ভব না হয়, তবে সরকার ব্যস্ততম এলাকার স্কুল-কলেজের সামনে মহাসড়কের ওপর ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ করুক-এমনটাই আমরা চাই।
পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুছ সাত্তার বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে সড়ক ও জনপদের ছবিসহ সাইনবোর্ড দেয়া থাকে। অথচ বাস চালক বা ছোট বড় যে কোন পরিবহন তা মানছে না।
ক্রসিং হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ মুজিবুর রহমান বলেন, সড়কের কোথায় কী হবে সেটা সড়ক বিভাগের দায়িত্ব।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর













