মাকসুদ আহম্মদ, বিশেষ প্রতিবেদক »
২০১৯ সালে চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোডের ফৌজদারহাট উপকূলবর্তী বিশালতায় গড়ে তোলা হয় আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন স্পট। যা পতেঙ্গা থেকে ক্রমান্বয়ে প্রায় ১৭ কিমি. বিস্তৃত হওয়ার কথা। তবে এর মধ্যে ৫ কিমি. এলাকায় পাঁচ তারকা হোটেলসহ ব্যবসার অপার সম্ভাবনা তৈরী করার কথা থাকলেও প্রকল্পটি হোঁচট খেয়েছে। ফলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) পতেঙ্গা সী বীচের কোল ঘেঁষে গড়ে তোলা প্লাটফর্ম দেখভাল করছে না। এমন পরিস্থিতিতে শোচনীয় অবস্থায় রূপ নিয়েছে এই পর্যটন স্পটটি। ঝোপ-জঙ্গলে আর ময়লা আবর্জনায় ভরে গেছে পর্যটকদের বসার জন্য প্রতিস্থাপনকৃত সিমেন্টের রঙ্গিন ব্লকগুলো। দেখার কেউ নেই।

এছাড়াও পর্যটকদের নিঃসৃত ময়লা আবর্জনা যেন পর্যটন স্পটটুকুকে কালিমাযুক্ত করেছে। সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে এসব আবর্জনা ভেসে আসছে আর যাচ্ছে। অপরদিকে বীচ প্লাটফর্মে ভাসমান হকারদের পসরার ভ্যানগাড়ীগুলো যখন পলিথিনে মোড়ানো থাকে তখন অনেকটা রাস্তার ফুটপাত দখল করার মত মনে হয়। পাঁচ কিলোমিটার ব্যাপী বিশ্বমানের এই পর্যটন কেন্দ্র চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের(সিডিএ) পরিচালনায় থাকার কথা থাকলেও তা থমকে দাঁড়িয়েছে। চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বিশ্বমানের পর্যটন প্রকল্পটি এখন প্রশ্নবিদ্ধ।
নগরীর সমূদ্র উপকূলীয় এলাকা রক্ষায় প্রায় ৩০ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন এই সড়ক একদিকে যেমন বেড়ীবাঁধ হিসেবে কাজ করবে অন্যদিকে প্রায় ৮৪ ফুট প্রশস্থ এই সড়কের মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে উঠার সুযোগ থাকছে। ২০১৯ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় হওয়ার কথা। উল্ল্যেখ, পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলিামিটার চিটাগাং আউটার রিং রোড প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে ২০১১ সালে। ২০২২ সাল নাগাদ শেষ হতে পারে।

জানা গেছে, ২০০৬ সালে জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি) চট্টগ্রাম শহরের অপ্রতুল অবকাঠামোগত অসুবিধা চিহ্নিতকরণে একটি সমীক্ষা পরিচালনা করে। ওই সমীক্ষায় ট্রাংক রোড নেটওয়ার্কের আওতায় দুটি রিং রোড ও ৬টি রেডিয়াল রোড নির্মাণের প্রস্তাব করে জেবিআইসি। এ প্রস্তাব অনুযায়ী, চট্টগ্রাম সিটি রিং রোডটি নির্মানের গুরুত্ব দেয়া হয়।
একসময় চউকের মাস্টারপ্ল্যানে এ রিং রোড প্রকল্পটি থাকলেও তা নির্মাণে স্থানীয়রা নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। তবে ২০১১ সালের জুন মাসে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু করে প্রথম পর্যায়ে ২০১৭ সালে শেষ করার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে ২০২২ সালে শেষ হবার কথা রয়েছে। পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার এই সড়কের পাশে ৫ কিলোমিটার জায়গায় বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র তৈরী করার কথা।

এই আউটার রিং রোড প্রকল্পের সড়কটি ১৭ কিলোমিটার হলেও এরমধ্যে ১৫ দশমিক ২ কিলোমিটার কোস্টাল রোড এবং ২ দশমিক ১৫ কিলোমিটার ফিডার রোড রয়েছে। ১নং ফিডার রোড পতেঙ্গা থেকে কাঠগড় পর্যন্ত, ২নং ফিডার রোড বড়পুল থেকে পোর্ট কানেটিং রোডের সঙ্গে যুক্ত হবে এবং ৩ নং ফিডার রোডটি সাগরিকা বিভাগীয় স্টেডিয়ামের পাশে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। এরমধ্যে সাগরিকা জহুর আহমদ স্টেডিয়াম সংলগ্ন ফিডার রোড-৩ এর আওতায় সড়কের দৈর্ঘ্য হচ্ছে শূন্য দশমিক ৯৫ কিলোমিটার। যার প্রস্থ ১৫ দশমিক ৬০ মিটার। ওই এলাকা ভূমি অধিগ্রহণের পরিমাণ ৭ দশমিক ৬ একর। এই ফিডারের আওতায় শূন্য দশমিক ৪৯৫ পয়েন্টে একটি রেলওয়ে ওভার ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে। উল্ল্যেখ, ২ হাজার ৪২৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে এ রিং রোডের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এরমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ১ হাজার ৭২০ কোটি টাকা ও জাইকার অর্থায়নে ৭০৬ কোটি ৩ লাখ টাকা।
বাংলাধারা/এফএস/এফএস













