করোনাভাইরাসের দোহাই দিয়ে গতকয়েকদিন ধরে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড ঘেরাও করে পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানাচ্ছেন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। কিন্তু সরেজমিনে দেখা গেছে, আন্দোলনকারীদেরই অধিকাংশ মানছেন না করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক, গ্লাভস তো দূরের কথা,তিন ফুট সামাজিক দূরত্বের বালাইও নেই। অথচ তাদের আন্দোলনের মূল দাবি করোনাকালীন স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়ানো!
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সামনে চলমান এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের আন্দোলনে দেখা যাচ্ছে চিত্র একেবারেই ভিন্ন। স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রতি তাদের অনীহা যেন আন্দোলনের যুক্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আন্দোলনে অংশ নেওয়া অনেক শিক্ষার্থীর মুখে মাস্ক নেই, হাতে নেই হ্যান্ড গ্লাভস। কেউ কেউ গায়ে গায়ে লেগে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিচ্ছেন, কেউ আবার হাঁচি-কাশির সময়ও ন্যূনতম সতর্কতা অবলম্বন করছেন না।
এমনই এক আন্দোলনকারী, ওমরগণি এমইএস কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহর সঙ্গে কথা হলে তার জবাবগুলো ছিল হ-য-ব-র-ল এর মতোন। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে আন্দোলনের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “২-১জন মিডিয়ার সাথে কথা বলতে হয়, স্লোগান দিতে হয়। প্রচণ্ড গরমে মাস্ক পরা যায় না।”
আরও প্রশ্ন করা হলে, জনসমাগম এড়িয়ে চলতে পরীক্ষা পেছানোর দাবি করছেন, অথচ নিজেরাই ভিড় করছেন কেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমরা এখন সুস্থ আছি। পরীক্ষা চলাকালীন যদি অসুস্থ হই, তখন তো আর পরীক্ষা দেওয়া যাবে না। আর আন্দোলনে তো এত সুরক্ষা মানা যায় না।”
যেখানে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন সামনের দিনগুলোতে করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে পরীক্ষা না হলে কি করবেন? জবাবে এই শিক্ষার্থী বলেন, “পূর্বের করোনা সময়ে যা করছিলো কর্তৃপক্ষ, এখনই তারা সেভাবে পদক্ষেপ নিবে।”
তবে বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. সাইফুদ্দীন সোহাগ বলেন,“করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে মাস্ক পরিধান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও জনসমাগম এড়িয়ে চলা অত্যন্ত জরুরি। এসব না মানলে সংক্রমণ বাড়তে সময় লাগবে না।”
এই বিষয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ইলিয়াছ উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, পরীক্ষা পিছানোর দাবিতে আন্দোলন করছেন গুটি কয়েক শিক্ষার্থী। কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা চাচ্ছে যতদ্রুত সম্ভব পরীক্ষা শেষ করার। আর ইতোমধ্যে পরীক্ষা নিতে সকল প্রস্তুতি শেষ করেছি। তবুও আমরা আন্দোলনকারীদের বক্তব্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি, বাকী সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়ের।
ইমন/বাংলাধারা













