পাল্টা শুল্ক ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান দর-কষাকষির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের কাছ থেকে ২৫টি বিমান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। রবিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান।
তিনি জানান, এই ২৫টি বিমান ক্রয়াদেশের মধ্যে কয়েকটি আগামী এক-দুই বছরের মধ্যেই সরবরাহ করা হতে পারে। এরই মধ্যে ভারত, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলোও বড় অর্ডার দিয়েছে, তাই বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হতে পারে। তবে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কয়েকটি বোয়িং পাওয়ার চেষ্টা চলছে।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্টা শুল্ক ইস্যুতে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা করতে একটি প্রতিনিধিদল আগামীকাল (সোমবার) সন্ধ্যায় ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা দেবে। ওই বৈঠকে অংশ নেবেন বাণিজ্য উপদেষ্টা, নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং বাণিজ্যসচিব।
বাণিজ্যসচিব বলেন, “ওয়াশিংটনে ২৯ ও ৩০ জুলাই ইউএসটিআর অফিসে বৈঠক নির্ধারিত হয়েছে। ৩১ জুলাই আরেকটি পর্যালোচনা সভা হতে পারে। আমাদের ধারণা, ১ আগস্টের মধ্যে শুল্ক সংক্রান্ত আলোচনার একটি ফলাফল পাওয়া যাবে।”
বিমান কেনা ও গম আমদানির পাশাপাশি আরও চুক্তি
মাহবুবুর রহমান জানান, বোয়িং বিমান কেনার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত নয়, এটি একটি বেসরকারি কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম। সরকারের পরিকল্পনায় আগে ১৪টি বোয়িং কেনার সিদ্ধান্ত ছিল, এবার তা বাড়িয়ে ২৫টি করা হয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির একটি সরকারি চুক্তি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান তিনি। দেশের সরকারি-বেসরকারি খাতে বছরে প্রায় ৯ মিলিয়ন টন গম আমদানি করা হয়। পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে সয়াবিন ও তুলা আমদানির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। সয়াবিন আমদানির জন্য ব্যবসায়ীরা যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবেন, তুলা আমদানির আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে চাপে যুক্তরাষ্ট্র
বাণিজ্যসচিব বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে সামগ্রিক বাণিজ্যঘাটতি ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার। তারা এখন সেই ঘাটতি কমাতে চায়, এ কারণেই পাল্টা শুল্ক আরোপের পথে হেঁটেছে। তবে আমরা আশা করছি আলোচনার মাধ্যমে একটা ইতিবাচক সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হবে।”
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় এই নতুন বোয়িং ক্রয় ও পণ্য আমদানির সিদ্ধান্ত কৌশলগত বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এতে একদিকে যেমন দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার হবে, তেমনি পাল্টা শুল্ক ইস্যুতে বাংলাদেশ একটি কার্যকর সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাধারা/এফইএমএফ