ইয়াসির রাফা »
স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির আগে প্রতি বছর পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করতে অভিযান পরিচালনা করলেও, এসব অভিযানের পরপরই আবার পাহাড়ে ফিরে যায় বসবাসকারীরা। বর্ষায় পাহাড়ধসে প্রাণহানি ঠেকাতে চট্টগ্রামের ঝুঁকিপূর্ণ এসব পাহাড়ের অবৈধ বসতিমুক্ত করার প্রশাসনিক অভিযান বাস্তবায়ন করতে গিয়ে অনেকবার বাধার সম্মুক্ষীণ হতে হয়েছে।
কিন্তু দ্রুত অভিযান শুরু করা না গেলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধসে প্রাণহানির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা থেকেই যায়। প্রতিবারই বর্ষা মৌসুম শুরুর পূর্বে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের তালিকা করে সেখানে বসতি স্থাপনকারী পরিবার চিহ্নিত করে তাদের উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত হলেও তা পুরোপুরি কার্যকর হয় না, ঠেকানো যায় না পাহাড় ও ভূমিধসে প্রাণহানি।
চট্টগ্রামের পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা জানান, প্রতিবছরই উচ্ছেদ করার কথা বললেও বাস্তবে এর কোন ফল মিলে না। স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহায়তায় পাহাড় কেটে এর খাঁজে ঘর তুলে কম ভাড়ায় লোকজন নিয়মিতই বসতি গড়ে যাচ্ছে। এ থেকে উত্তরণে প্রশাসনের জোরদার ভূমিকার সাথে পাহাড়ে বসবাসকারী মানুষদের স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করার বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ জানান তারা।

জেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে জানা যায় , ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার মাইকিং করাসহ তাদের সতর্ক করা হয়েছে। পাহাড়ে উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করার কারণে প্রাণহানী অনেকাংশ কমে এসেছে। একেবারেই যাতে প্রাণহানী না হয় সেজন্য সেই ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলোতে জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি সেসব পাহাড়গুলোর মালিকানা যাদের হাতে সেই কর্তৃপক্ষকেও নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার জন্য বলা হবে।
চলতি মৌসুমে বৃষ্টি আর আসন্ন বর্ষায় পাহাড়ে বসবাসরতদের ঝুঁকি আরও বাড়ছে। অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধভাবে ঘরবাড়ি ও বস্তি তৈরি করে কম টাকায় ভাড়া দেয় প্রভাবশালীরা।

নগরের লালখান বাজার মতিঝর্ণা পাহাড় এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পাহাড় কেটে তার পাদদেশে তৈরি করা হয়েছে অসংখ্য বস্তিঘর। পাহাড় ধস হলে এখানকার লোকজনের জন্য অপেক্ষা করছে ভয়াবহ মৃত্যুর হাতছানি।
নগরে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ১৭টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় রয়েছে। এসব পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বাস করছে কয়েক হাজার পরিবার। এদিকে পাহাড় কাটা ও দখলের সঙ্গে জড়িতরা চিহ্নিত হলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় দখলকারীরা প্রতিবছর নতুন পাহাড় কেটে আরও বসতি স্থাপন করছে। এভাবে চলতে থাকলে এক দশক পরে শহর ও আশেপাশের এলাকায় একটি পাহাড়ও আর অবশিষ্ট থাকবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশ আন্দোলন কর্মীরা।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ













