মাকসুদ আহম্মদ, কক্সবাজার থেকে ফিরে »
পাহাড় আর লেকে বান্দবানের নৈসর্গিক দৃশ্য এবং বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সারা বছর ছুটছে পর্যটকরা। কিন্তু চলার পথে বিপাকে পড়ছে পরিবহনে থাকা পর্যটকরা। কারণ পোস্টার ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে সাতকানিয়ার কেরানীহাট মোড়ে থাকা কক্সবাজার ও বান্দরবানের দিক নির্দেশনা নামফলক। জেলা প্রশাসন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বহীনতার কারণে এ ধরনের বিপাকে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ পর্যটকদের।
বছরের পর বছর চট্টগ্রামের কেরানীহাট মোড়ে থাকা গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক ও দিক নির্দেশনা যেন থেকেও নেই। অনিয়মতান্ত্রিকভাবে পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন সাঁটানোর ফলে ঢেকে গেছে তা। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-বান্দরবান সড়কের পর্যটকরা প্রতিনিয়ত বিভ্রান্তিতে পড়ছেন। দিশাহারা হয়ে পড়েন কক্সবাজার ও পাহাড়কেন্দ্রিক শহর বান্দরবানের গতিপথ নিয়ে।
অপরদিকে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর বাইতুল ইজ্জত ট্রেনিং সেন্টার ও স্কুলের নামফলকও একই অবস্থানে ঢেকে প্রচারণার ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টারে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, কেরানীরহাট মোড় থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব প্রায় ৮৫ থেকে ৯০ কিলোমিটার। কিন্তু কেরানীরহাট থেকে প্রাকৃতিক অবয়বে গড়া সুউচ্চ পাহাড়বেষ্টিত নান্দনিক লীলাভূমি বান্দরবানের দূরত্ব প্রায় ২৩ কিলোমিটার। তিন পার্বত্য জেলার অন্যতম এই পার্বত্য জেলাটি দার্শনিক স্থানে ঘেরা। ফলে কক্সবাজারমুখী পর্যটকরা অনেক সময় কেরানীরহাট হয়ে বান্দরবানে প্রবেশ করেন। তবে এ ২৩ কিলোমিটার যেতে গাড়িতে সময় ব্যয় হয় কমপক্ষে দেড়ঘণ্টা। কারণ, সুউচ্চ পাহাড়ের উঁচু নিচুতেই চলে গেছে বান্দরবান সড়ক। যেখান থেকে নলিগিরি, নীলাচল, চিম্বুক, কিউক্র্যাডং, বগালেকসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট।
প্রত্যক্ষভাবে দেখা গেছে, নামফলক ও মাইলফলক স্থাপন করা হয় বিশেষ করে অচেনা মানুষ বা পর্যটকদের দিক নির্দেশনার উদ্দেশ্যে। অথচ, একশ্রেণীর অসাধু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিজ্ঞাপনের কারণে সেগুলো ঢেকে যাচ্ছে। ফলে অনেক পর্যটক দিকহারা হয়ে উল্টোপথে গিয়ে আবার ফিরে আসতে হয়। ফলে পর্যটকসহ নতুনদের মাঝে ক্ষোভ জন্ম নিলেও দেখার কেউ নেই। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কেই বান্দরবানগামী বাসের চলাচলও রয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে কেরানীরহাট মোড়ে পৌঁছালেই কক্সবাজার ও বান্দরবানের বিভক্তি শুরু হয়।
![]()
আরও দেখা গেছে, কেরানীহাটের এ মোড়টি বৃহদায়তন প্রতিষ্ঠানের সুবিশাল ব্যানার-ফেস্টুন আর প্রচারণায় ছেয়ে গেছে। পর্যটকদের গন্তব্য কোন দিকে সেটা খুঁজে নেওয়া অনেকটা মুষ্কিল। তবে যাত্রীবাহী বাস কিংবা অন্যান্য গণপরিবহণগুলো যথা নিয়মে চললেও পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটে চলা প্রাইভেট গাড়িগুলো পড়ে যায় চরম বেকায়দায়। দিক নির্দেশনা যখন পোস্টারে ছেয়ে গেছে, জেলা প্রশাসন ও সওজের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকর্তাদের সচেতনতা যখন মাটিতে পিস্ট হয়েছে সেখানেই পর্যটকরা বিভ্রান্তিতে পড়ে দিকবিদিক ছুটে পুনরায় গন্তব্যের দিকে ছুটে চলেন স্থানীয়দের পরামর্শে।
এ বিষয়ে সওজ এর কক্সবাজার জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, পর্যটকরা বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতকে ঘিরে কক্সবাজার যেতে শুধু দেশেরই নয় বিদেশ থেকেও পর্যটকরা ভীড় জমায়। ফলে প্রতিদিনই যান চলাচলের চাপ থাকে সবচেয়ে বেশি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে। কিন্তু সাতকানিয়ার কেরানীরহাটে নামফলক ও মাইলফলক দুটোই তিন সড়কের ত্রিভূজ মোড়ে স্থাপিত রয়েছে। যা থেকে দেশি-বিদেশী পর্যটক এমনকি স্থানীয়রাও অনুসরণ করেন ওইসব ফলক।













