শাহ আব্দুল্লাহ আল রাহাত»
করোনা মহামারির পর দেশে আবারো আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে তৈরী পোশাকখাত। চলতি বছরের শুরুতে চট্টগ্রাম বন্দর সর্বোচ্চ কন্টেইনার ভর্তি পণ্য রপ্তানি হয়েছে যার বেশীর ভাগই ছিলো পোশাক সামগ্রী। ফলে পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের কদরও বেড়েছে, বেড়েছে বেতন ভাতা এবং পাচ্ছে ওভার টাইম কাজ করার সুযোগ। তবে দিন দিন দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে অতিরিক্ত আয় দিয়েও জীবনধারণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে এসব পোশাক শ্রমিকদের।
মুদ্রাস্ফীতির কারণে পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের বর্তমানে নুন আনতে পানতা ফুরানোর মতো সময় পার করতে হচ্ছে। জীবনধারণের প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী উপর অতিরিক্ত ১৩ শতাংশ অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে এসব পোশাক শ্রমিকদের। চট্টগ্রামসহ সারা দেশে কর্মরত পোশাক শ্রমিকদের বেশীর ভাগই নারী। যাদের অনেকের উপর নির্ভরশীল পুরো পরিবার। অতিরিক্ত কর্মঘন্টা কাজ করেও সংসারের হাল টানতে বেগ পেতে হচ্ছে এসব পোশাক শ্রমিকদের। বাংলাদেশে করোনা মহামারীর শুরুর দিকে পোশাক শ্রমিকদের প্রনোদনা এবং সঠিক সময়ে বেতন ভাতা দেওয়ার ব্যাপারে সচেষ্ট থাকার কথা বলেন বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। বাংলাধারাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি পোশাক শ্রমিকদের গুরুত্ব উল্লেখ করে বলেন, শ্রমিকদের কর্মঘন্টা বেড়েছে,তারা ওভারটাইম কাজ করে অতিরিক্ত অর্থ আয় করতে পারছে। তবে এই অতিরিক্ত অর্থ আয় করলেও কিংবা আয় বাড়লেও তার চেয়ে বেশী হারে বেড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম।
নগরীর খাতুনগঞ্জ বাজার ঘুরে দেখা গেছে বস্তাপ্রতি চালের দাম বেড়েছে ৩০০-৫০০ টাকা। আড়তদারদের তথ্যমতে, গত কয়েক দিনের ব্যবধানে চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে চিনিগুঁড়া চালের দাম বস্তায় ৪৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার টাকা। কদিন আগে ২ হাজার ৭শ টাকায় বিক্রি হওয়া জিরাশাইল চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকা, ১ হাজার ৯৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া পাইজাম চাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২৫০ টাকায়, ১ হাজার ৭শ টাকায় বিক্রি হওয়া মোটা চালের দাম এখন ১ হাজার ৯শ টাকা, ২ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া মিনিকেট সিদ্ধ এখন ২ হাজার ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ প্রায় সব চালের দাম গড়ে বেড়েছে প্রায় ৩০০ টাকা। এভাবে প্রতিনিয়ত দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পোশাক শ্রমিকরা।চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড় এলাকায় পোশাক কারখানায় অতিরিক্ত ঘন্টা কাজ করে ১৪ হাজার টাকা বেতন পান রোখসানা আক্তার। এই অর্থ দিয়ে এক ভাই বোনের সংসারের হাল টানছেন তিনি।তবে বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে অনেকটা দিশেহারা তিনি। বাংলাধারাকে তিনি বলেন, চাউলসহ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে গত কয়েকমাস যাবত ধার দেওনা করতে হচ্ছে তাকে। এছাড়া নাজেহাল অবস্থায় পড়েছে পোশাক শ্রমিক আমেনার পরিবার।অতিরিক্ত অর্থ আয় করেও সংসারের হাল টানতে পারছেন না তিনি।













