২৪ অক্টোবর ২০২৫

পোশাক শ্রমিকরা যত্রতত্র হলেই আতঙ্ক

বিশেষ প্রতিবেদক  »

কাল থেকে শুরু হচ্ছে পোশাক শিল্প কারাখানায় কর্মযঞ্জ। এ কর্মযঞ্জকে ঘিরে শনিবার সকাল থেকেই নগরীর প্রবেশদ্বার সিটিগেট ও কর্ণফুলী ব্রিজ এলাকা দিয়ে পোশাক শ্রমিকদের নগরীতে প্রবেশ শুরু হয়েছে। যেকোন যানবাহনে চড়ে আসছে পোশাক শ্রমিকরা। করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই নগরীতে প্রবেশাধিকার এখন আতঙ্ক নগরবাসীদের জন্য। পোশাক কারখানা শ্রমিকরা কাল থেকে আবারও বেপরোয়া চলাফেরা করবে। যত্রতত্র বিচরনের কারণে এলাকায় নেমে আসতে পারে কালরাত্রি। এর মূল কারণ হচ্ছে দলবেঁধে চলাফেরা ও সচেতনতার অভাব পোশাক শ্রমিকদের। করোনার প্রকোপ বাড়ছে তা জানা যাচ্ছে আইইডিসিআর এর তথ্য অনুযায়ী স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য থেকে। রবিবার (১ আগস্ট) থেকে আবারো চালু করা হচ্ছে গার্মেন্টসসহ শিল্প কারখানা।

কাল থেকে চট্টগ্রামে খুলে দেওয়া হচ্ছে প্রায় ৩শ’ গার্মেন্টস কারখানা। অথচ এসব কারখানার গার্মেন্টস কর্মীরাই কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে মৃত্যুকূপ তৈরীতে। কারণ নগরীর আনাচে কানাচে থাকা এসব পোশাক শ্রমিকরা ঈদের ছুটিতে বাড়ীতে ছিল। এসব কর্মীদের বহনে শুধু চট্টগ্রামেই রয়েছে প্রায় সাড়ে আটশ সিটি বাস। চট্টগ্রামের পাঁচ লাখ পোশক শ্রমিক নগরীর এমন কোন স্থান নেই যেখানে বসবাস করেন না। মাস্ক ব্যবহারে সচেতনতার বালাই নেই। সামাজিক দূরত্বতো তাদের জানাই নাই। খোদ বিজিএমইএ পোশাক শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারেনি এখন পর্যন্ত।

বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যেসব কারখানা শ্রমিকদের জন্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পেরেছে শুধু ওইসব কারখানা খুলতে পারবে। কিন্তু চট্টগ্রামের প্রায়ই পোশাক করাখানা খোলা হয়ে শুধুমাত্র কারখানায় প্রবেশ ও বাহির হওয়ার সময় সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, গার্মেন্টেসের টুকরো টুকরো জুট কাপড় দিয়ে তৈরী মাস্ক ব্যবহারের মধ্যেই পোশাক শ্রমিকদের নাজুক সুরক্ষা নিশ্চিত করেছে মালিকপক্ষ।

মালিকপক্ষ বলছেন, ফরেন বায়ার(বিদেশী ক্রেতা) নষ্ট হয়ে যাচ্ছে করোনার কারণে। বন্ধ হওয়া কারখানায় উৎপাদন বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা অনিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে। তবে এমন কোন ইতিহাস নেই বলে সচেতন ব্যক্তি ও শ্রমিক সংগঠনগুলো বলছে ‘গার্মেন্টেসে কাজ না করিয়ে শ্রমিকদের বেতন প্রদান করার মত অস্বাভাবিক ঘটনা’ ফলে মালিকপক্ষ কাজ হাসিল করেই সরকারের নির্দেশনা মত বেতন দিতে রাজি হয়।

মোবাইলে বিকাশের মাধ্যমে বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও শেষতক ৯০ ভাগ শ্রমিকের বেতন পরিশোধের কথা সঠিক নয়। মূলতঃ সরকারকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে মালিকপক্ষ। এমন অভিযোগ শ্রমিকদের। শ্রমিকরা এমনও বলছে, মালিকপক্ষ কিছু অসাধু মিডিয়া কর্মীকে ম্যানেজ করে শ্রমিকদের বিপক্ষে বলছে।

এদিকে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব পড়েনি বাজারগুলোতে। কাঁচাবাজার ও এলাকাভিত্তিক দোকানপাট বিভিন্ন সময়ে বন্ধ ও খোলার নির্দেশনা দেয়া হলেও মানতে পারছে না ব্যবসায়ীরা। পুলিশের সঙ্গে লুকোচুরির মধ্য দিয়েই বলেছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের চলতে হচ্ছে। অপরদিকে, বৃহদায়তন কাঁচা বাজারগুলোতেও গত কিছুদিন ধরে শুধু কাঁচাবাজার ও মাছ বাজার সরিয়ে নেয়া হয়েছে খোলা মাঠে বা সড়কের পাশে। করোনা সংক্রমণ থেকে দূরে রাখতে মানুষকে সামাজিক ও শারীরিকি দূরত্ব বজায় রাখার ম্যাসেজ দিয়া হচ্ছে মোবাইল, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে। কিন্তু তবুও রোধ করা যাচ্ছে না করেনার সংক্রমণ। প্রতিদিনই সংক্রমিতের সংখ্যা যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে মৃত্যুহার। ক্রমাগত দেশ এগুচ্ছে মৃত্যুকূপের দিকে।

বাংলাধারা/এফএস/এআর

আরও পড়ুন