৩১ অক্টোবর ২০২৫

প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে মিরসরাইয়ের শাহ নেওয়াজ

মিরসরাই প্রতিনিধি »

যিনি বিলান সততার শিক্ষা তাকে খোজে ভুক্তভোগীরা। পেশায় তিনি একজন কলেজ শিক্ষক। ঢাকার নাম করা একটি কলেজের ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান। ভালো মানুষ বলেই সকলে তাকে সম্মান করেন ও বিশ্বাস করেন। সাধারণ মানুষের এই বিশ্বাসকে পুজিঁ করে গ্রামের সাধারণ মানুষকে স্বপ্ন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন অর্থ।

স্বপ্ন দেখানো এই ভালো মানুষের আড়ালের মানুষটি হচ্ছেন- শাহ নেওয়াজ চৌধুরী। ১০নং মিঠানালা ইউনিয়নের পাত্তার পুকুর এলাকায় তার বাড়ি। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি এমএলএম ব্যবসা ডেসটিনির সাথে জড়িয়ে পড়েন। ডেসটিনি একদিন বন্ধ হয়ে গেলেও বন্ধ হয়নি তার ব্যবসা।

তিনি সামি ডিরেক্ট, টিভিআই, স্পীক এশিয়া, টিয়েনসি, গেনো ওয়ার্ল্ড, ডোলেন্সার, এমএক্সএন, ফরএবার, এমওয়ে, স্বাধীন, প্লাটিনাম লুব্লিকেন্টসহ আরো কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নামে বেনামে জড়িয়ে পড়েন। আর এই ব্যবসার ফাঁদে ফেলে তার এলাকা সহ দেশের বিভিন্ন জায়গার বেশ কয়েকজন যুবকের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন বিপুল টাকা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ভুক্তভোগী বলেন, এলাকার বড় ভাই বলে, বাড়িতে আসলে তার কাছে প্রায়ই আমরা যেতাম, বিভিন্ন বুদ্ধি পরামর্শ নিতে। একদিন তিনি আমাকে প্লাটিনাম লুব্রিকেন্টে টাকা লগ্নি করতে বলেন। এখানে টাকা লগ্নি করলে এক বছরের মধ্যে মূল টাকার অর্ধেক মূনাফা করা যাবে। তার কথায় বিশ্বাস করে সরল মনে আড়াই লক্ষ টাকা লগ্নি করি।

তিনি বলেন, দুই বছর পেরিয়ে গেলেও মুনাফাতো দুরের কথা আসল টাকাই ফেরৎ পাইনা। তার সাথে যোগাযোগ করারও কোনো সুযোগ নেই। আমার মোবাইল নাম্বার ব্লক লিস্টে রেখেছেন। উনার স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করলে শুধু আশার কথা শুনিয়ে যান, গত রমজানে বাড়িতে আসলে একটা সমাধান হওয়ার কথা দিলে ও তাদের কথা রাখেন নাই, বাসায় গেলেও তিনি দেখা করেন না।

তার ভয়ে নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি অন্য ভুক্তভোগী তিনি বলেন, আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে শাহনেওয়াজের সাথে পরিচয়। তিনি আমাকে প্লাটিনাম লুব্লিকেন্ট কোং এ টাকা খাটাতে বলেন। বিপরীতে লোভনীয় মুনাফার হাতছানি। আমি কোনো চিন্তা না করে ২০১৬ সালের জুন মাসে এক ধাক্কায় আড়াই লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করি। তার পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো টাকা পাইনি। আসল টাকার জন্য অনেক ঘোরাঘুরি করলেও তিনি দেখা করেন না। টাকা দেয়ার ব্যাপারে আমি কি করতে পারি কিছু বুঝতে পারছি না।

অন্য এক ভুক্তভোগী মো. মেহেদী হাসান বলেন, আমি এই প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আদালত থেকে উনি সময় নিয়েছেন।

ভুক্তভোগী রাজিব দাশের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলাম। ইচ্ছা ছিলো দেশে এসে একটা ব্যবসা বানিজ্য করবো। এরই মধ্যে শাহনেওয়াজ চৌধুরীর খপ্পরে পড়ি। তিনিও আশ্বাস দিয়েছেন, দেখিয়েছেন বড় ব্যবসার স্বপ্ন। তাঁর ফাঁদে পা বাড়াই। সে আমাকে একটা ডিস্টিবিউর ব্যবসা দিবেন বলে আমার প্রবাসের কষ্টে অর্জিত টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে সে আমার সাথে যোগযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এখন আমি পথের ফকির।

এদিকে এবিষয়ে জানতে শাহনেওয়াজ চৌধুরীর মোবাইল ফোনে একাদিকবার কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

১০নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল আলমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এবিষয়টা আসলে আমার জানা নেই। তাছাড়া শাহনেওয়াজ চৌধুরী নামের কাউকে আমি চিনিনা। তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

বাংলাধারা/এফএস/এমআর

আরও পড়ুন