বাংলাধারা প্রতিবেদন »
দিনক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে। প্রতীক হাতে পেয়েই নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন প্রার্থীরা। উৎসবমুখর পরিবেশে পথসভা ও গণসংযোগে প্রার্থীরা উন্নয়নের ধারা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন। উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছে বন্দর নগরীজুড়ে। এ নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীরা লড়ছেন সরাসরি দলীয় প্রতীকে আর কাউন্সিলর প্রার্থীরা পেয়েছেন দলীয় সমর্থন।
চট্টগ্রাম সিটির ৪১টি ওয়ার্ডেই ভোটের মাঠে রয়েছেন প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তবে তাদের সঙ্গে দুই দলেরই সমর্থনবঞ্চিতরা ‘স্বতন্ত্র’ অথবা ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্বাচনে রয়েছেন। ফলে এই বিদ্রোহী কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই দলের সমর্থিত প্রার্থীদের জন্য বড় শূল হয়ে দেখা দিয়েছে।
দলেরই সাংগঠনিক শাস্তির কড়া হুঁশিয়ারির পরও দমানো যায়নি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের। মনোনয়ন প্রত্যাহারে দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করেই নির্বাচনী লড়াইয়ে অনড় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রার্থীরা শহরের বিভিন্ন জায়গায় প্রচারণা চালাচ্ছেন। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো চট্টগ্রাম নগরী। আওয়ামী লীগের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারণা বিএনপির প্রার্থীদের চেয়ে বেশি। এরই মধ্যে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা ও আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগে জমজমাট লড়াই শুরু হয়েছে নির্বাচনের মাঠে।

প্রতিদিনই সকাল থেকে শুরু করে মধ্য রাত পর্যন্ত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ছুটছেন নগরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। ভোটারদের জড়িয়ে নিচ্ছে বুকে, করছেন কোলাকুলি, মোসাফা। প্রচারণাকালে সড়কে এবং দোকানে-বাড়ি-ঘরে মানুষদের হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন প্রার্থীরা। নগরীর সড়ক, অলিগলিতে ঝুলছে প্রার্থীদের পোস্টার। হঠাৎ পাড়া-মহল্লা, মূল সড়কে সমর্থকরা বের করছেন স্ব স্ব প্রার্থীর পক্ষে মিছিল। দুপুরের পর থেকে চলছে গানের সুরে সুরে ভোট চাওয়ার মাইকিং।
মহল্লা থেকে শুরু করে শহরের প্রায় প্রতিটি চায়ের দোকান, বাজার, অফিস, আড্ডার আলোচনা সিটি নির্বাচন। এছাড়াও ভোটারদের কাছে টানতে নানা কৌশল অবলম্বন করছেন প্রার্থীরা। ডিজিটাল প্রচারণা, বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনি গান, গণসংযোগ, পরিচিত তারকাদের নিজেদের পক্ষে প্রচারে নামানো, প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরিসহ সব চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ফেসবুকে পেজ খোলাসহ প্রার্থীদের লাইভ করার মাধ্যমে এবারের প্রচারে ভিন্নমাত্রা যোগ হয়েছে।
গতকাল সোমবার (৯ মার্চ) প্রতীক বরাদ্দের পরপরই সামাজিক ও দলীয় কর্মসূচির মাধ্যমে প্রধান দুই মেয়রপ্রার্থীর আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল কমির চৌধুরী ঘরোয়া নানা কর্মসূচির মাধ্যমে গুছিয়ে নিচ্ছেন ভোটের কাজ। অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন দলীয় কার্যক্রমে। ঠিক করছেন নির্বাচনের কর্মপন্থা ও পরিকল্পনা।
এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে তৎপর বিএনপিও। এরই মধ্যে কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠন, পোলিং এজেন্ট চূড়ান্ত করাসহ নির্বাচনী কাজ সম্পন্ন করেছেন তারা। ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীসহ দলের নেতা-কর্মীরা। একই সাথে দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন।
প্রতীক বরাদ্দের প্রথম দিন সোমবার (৯ মার্চ) রাতে রামপুর ওয়ার্ডের ২নং ইউনিট মতবিনিময় করেন তিনি। দেখা গেছে এ মতবিনিময় সভায় ইউনিটের সর্বস্তরের জনগণের উপস্থিতি যেন উৎসবে পরিণত হয়েছে রামপুর বৈশাখী মাঠ।
মাদকমুক্ত এলাকা গড়ে তোলার আশাবাদ জানিয়ে ২৫নং রামপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মনোনীত কাউন্সিল পদপ্রার্থী আব্দুস সবুর লিটন বলেন, আমরা মাদকমুক্ত রামপুর গড়তে চাই। যদি নির্বাচিত হই তবে অবশ্যই রামপুরকে জলজট, ভূমিদস্যু, মাদকমুক্ত হেলদি সিটিতে রূপান্তর করবো।
বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে লিটন বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। আমি আশা করব রামপুর ওয়ার্ডের জনগণ আমার ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখবেন।
মতবিনিময় সভায় তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে জয়ী হলে অত্র ওয়ার্ডের উন্নয়নের কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করবো। উল্লেখযোগ্যভাবে বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত বহু পুরাতন রাস্তাকে সংস্কার ও আধুনিকায়ন করে পুরো ২৫নং ওয়ার্ডকে সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করবো। আমার এলাকার মুরব্বিদের সাথে নিয়ে এলাকার ব্যাপক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবো।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ













