বাংলাধারা ডেস্ক »
পার্বত্য জেলা বান্দরবানে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব ওয়াগ্যেই পোয়েঃ (প্রবারণা পূর্ণিমা)।
এ উপলক্ষে শহর ও পাহাড়ি পল্লীগুলোতে চলছে ধর্মীয় ও আদি ঐতিহ্য কৃষ্টি-সংস্কৃতি এবং নানান আচার-অনুষ্ঠান। প্রাণীজগতের মঙ্গল কামনায় জাদীতে জাদীতে বিশেষ প্রার্থনাও করছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়। প্রবারণা পূর্ণিমাকে ঘিরে বান্দরবানে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
মারমা সম্প্রদায় জানায়, বান্দরবানে শনিবার (১২ অক্টোবর) সমবেত প্রার্থনার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে মারমা সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ওয়াগ্যেই পোয়েঃ (প্রবারণা পূর্ণিমা)।
মারমা সম্প্রদায়ের তিন দিনব্যাপী উৎসবে রয়েছে ক্যায়ং (জাদী) এ ধর্মীয় গুরুদের ছোয়াইং দান (খাবার দেওয়া), ফানুস উড়ানো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পিঠা তৈরি, হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, রথযাত্রা এবং সাংঙ্গু নদীতে রথ বিসর্জন।

প্রথা আছে, সিদ্ধার্থ গৌতম বুদ্ধ মাথার এক গুচ্ছ চুল কেটে বলেছিলেন, তিনি যদি সিদ্ধিলাভের উপযুক্ত হন তাহলে এই কাটা চুল যেন নিচে না পড়ে উপরে উঠে যায়। তাঁর এ ইচ্ছানুযায়ী চুলগুচ্ছ আকাশে উঠে গিয়েছিল। আর বুদ্ধের কেশধাতু পূজার স্মৃতির স্মরণে আকাশে এই ফানুস ওড়ানো হয়। এ কারণে আত্মবিশ্লেষণের শিক্ষা, মাতৃকর্তব্য পালন ও বিনয়বিধান অনুশীলনের বহুবিধ মহিমায় এই প্রবারণা পূর্ণিমা মহিমান্বিত। প্রতিবছর আশ্বিনী পূর্ণিমায় বৌদ্ধরা শ্রদ্ধা-ভক্তির মধ্য দিয়ে প্রবারণা পূর্ণিমা পালন করে।
প্রবারণা উৎসবকে ঘিরে পাহাড়ি পল্লীগুলো সেজে উঠেছে নতুন সাজে। মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা নতুন পোশাকে ঘুরে বেড়াচ্ছে এক পাড়া থেকে অন্যপাড়ায়। মারমা তরুণী সাই মে প্রু জানায়, তিন মাস বর্ষবাস (উপবাস) পালনের পর তারা আজ প্রবারণা পূর্ণিমা পালন করছে।
বৌদ্ধ ধর্মে বিশ্বাসী মারমারা তিনমাস উপবাসের পর ওয়াগ্যেই পোয়ের দিন খাবার গ্রহণ করে থাকে। আর এ দিন ফানুস উড়িয়ে মারমা সম্প্রদায় সব পাপ আকাশে উড়িয়ে দিয়ে নিজেদেরকে পাপমুক্ত করে।
মারমা সম্প্রদায়ের একজন বলেন, এদিন গৌতম বুদ্ধ একগুচ্ছ চুল আকাশে উড়িয়ে দিয়েছিল। এ জন্য আজ আমরা আকাশে ফানুস উড়িয়ে নিজেদের পাপ মোচন করছি। তিন মাস বর্ষবাস উপবাস পালনের পর আজ আমরা প্রবারণা উৎসব পালন করছি।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) গভীর রাতে সাঙ্গু নদীতে রথ বির্সজন এবং মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকালে পূর্ণাথে বিহারের উদ্দেশে গমন, পঞ্চশীল গ্রহণ ও ধর্মদেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই উৎসব।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর/এএ













