পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে টানা ৯ দিনের ছুটিতে লাখো মানুষ চট্টগ্রাম ছেড়ে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে গ্রামে গেছেন। ফলে নগরীর প্রধান সড়ক ও অলিগলিতে যানবাহনের চাপ কমে গিয়ে এক অচেনা নীরবতা নেমে এসেছে। তবে যাত্রীবাহী বাস, মিনিবাস এবং অটোরিকশায় বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার (৩০ মার্চ) সকালে নগরীর জিইসি, ওয়াসা, টাইগারপাস, দেওয়ানহাট, আগ্রাবাদ, নিমতলা, অলংকারসহ বিভিন্ন এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে। ব্যস্ততম আগ্রাবাদ মোড়েও গাড়ির চাপ ছিল কম। মূল সড়ক দখলে ছিল রিকশা ও মোটরসাইকেলের। কম যান চলাচলের কারণে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা পুলিশ বক্স থেকেই দায়িত্ব পালন করছেন।
নগরীর নিরাপত্তায় তিন স্তরের ব্যবস্থা
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা নগরীতে অপরাধ রোধে নগর পুলিশ তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সিএমপি জানিয়েছে, পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করবে বিশেষ দল। এছাড়া নগরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে, সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি চলছে।
নগরবাসীর নিরাপত্তায় কিছু নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ, যার মধ্যে রয়েছে—
- বাসা-বাড়ির দরজায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা লক ব্যবহার করা
- নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার ফাঁকা বাসায় না রাখা
- সিসিটিভি ক্যামেরা ও এলার্ম সিস্টেম স্থাপন
- নতুন নিরাপত্তাকর্মীদের এনআইডি সংরক্ষণ
- সন্দেহজনক ব্যক্তির উপস্থিতি টের পেলে পুলিশকে অবহিত করা
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা
ঈদের ছুটিতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ব্যাংকের ভল্ট ও আশপাশের এলাকায় সিসিটিভি নজরদারি নিশ্চিত করা হয়েছে এবং নিরাপত্তাকর্মীদের দায়িত্ব কঠোরভাবে পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
র্যাবের বিশেষ নজরদারি ও টহল
ঈদকে ঘিরে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় র্যাব-৭-এর বিশেষ টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন ও জনবহুল এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়েছে।
র্যাব-৭ জানিয়েছে, বাসের টিকেট সিন্ডিকেট ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া ছিনতাই, চুরি, মলম পার্টি ও অজ্ঞান পার্টির অপতৎপরতা ঠেকাতে বিশেষ নজরদারি ও অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ঈদ পরবর্তী বিনোদন কেন্দ্রের নিরাপত্তা
ঈদের ছুটিতে নগরীর বিনোদন কেন্দ্র, পার্ক ও চিড়িয়াখানাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে র্যাব ও পুলিশের যৌথ টহল চলবে।
যাত্রীরা যাতে নিরাপদে প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে।
এআরই /বাংলাধারা