১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তার নারী কেলেঙ্কারি

গিয়াস উদ্দিন»

ব্যাংক শাখা পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়ে যায় নিজের বিবাহিত স্ত্রীও। শুধু তাই নয়, ব্যাংকে লেনদেনের সুবাদে অন্যের স্ত্রীর সাথে পরকীয়ায় মত্ত হওয়াই যেন নিয়মিত অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুবেলের।

চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার শিকলবাহ উনিয়নের ভেল্লাপাড়া থানামহিরা এলাকায় বাড়ি হলেও চাকুরীর সুবাদে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক নড়াইলের লোহাগাড়া বাজারস্থ শাখার অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন মোহাম্মদ রুবেল আলম। সেখানে তার বিরুদ্ধে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে বিয়ে ও পরবর্তিতে তার সাথে প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন নড়াইলের লোহাগাড়া এলাকার রাফেজা খানম নামে এক নারী। ওই নারী নিজেকে ব্যাংক কর্মকর্তা রুবেলের স্ত্রী দাবি করছেন।

রাফেজা খানম নামে ওই নারী গত ৮ জুলাই রুবেলের বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগাড়ার কোর্টে যৌতুক নিরোধক আইনের তৃতীয় ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। সেখানে ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের একাউন্ট  (১৫৫৭১২৮০০০০০০১৯৯) থেকে ২ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ এবং তার ৮ ভরি ওজনের স্বর্ণ নিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন।

ব্যাংক কর্মকর্তা রুবেল এবং রাফেজা খানম নামে ওই নারীর বিয়ের নিকাহনামা বাংলাধারার কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। যেখানে ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ের বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।

রুবেলের স্ত্রী পরিচয় দেওয়া ওই নারী ছিলো বিবাহিত। নড়াইলের মাসুম শেখ নামে এক ব্যক্তির সাথে তার বিবাহ হয়েছিলো, যেখানে তাদের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে।

নড়াইলের লোহাগড়ার কাশিনগরের বাহিরপাড়া এলাকার আব্দুল মান্নান শেখের মেয়ে রাফেজা খানম বলেন, ‘ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক নড়াইলের লোহাগাড়া বাজার শাখায় আমার একটি একাউন্ট রয়েছে। টাকা লেনদেনের বিষয়ে ব্যাংকে আমার যাওয়া আসা ছিল। ব্যাংকের কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুবেল আলম ব্যাংক একাউন্ট সংক্রান্ত সহায়তার আড়ালে নানা ইমোশনাল প্রলোভন দেখিয়ে আমার সাথে ঘনিষ্ঠতার চেষ্টা চালায়। সে আমাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। আমার স্বামী-সংসার আছে জানালেও সে কৌশলে আমাকে ব্লেকমেইলিং করে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে বাধ্য করেন।’

রাফেজা মামলায় এজাহারে উল্লেখ করেন, ‘বিয়ের পর তাকে না জানিয়ে রুবেল কয়েকদিনের জন্য চট্টগ্রামের পটিয়ার বাড়িতে যাবে বলে বাসা থেকে বের হয়। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ ছিল। পরে তার কর্মস্থলে গিয়ে জানতে পারি রুবেল ব্যাংকটির অন্য একটি শাখায় বদলি হয়ে গেছেন। তার চলে যাওয়ার পর থেকে বাসাভাড়া ও এক কন্যা সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করি। চলতি বছরের ১৫ মার্চ রুবেলের মা-বাবা কয়েকজনকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসেন। তারা পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে বলেন, যৌতুক দিতে না পারলে তারা ছেলের বউ হিসেবে ঘরে তুলবেন না। আমার পিতার পক্ষে এত টাকা যৌতুক দেওয়াও সম্ভব না।’ 

ব্যাংক কর্মকর্তা রুবেলের মা রাজিয়া বেগম তার ছেলের সাথে রাফেজা খানমের বিয়ের কথাটি স্বীকার করে বলেন, ‘আমার সন্তান বাড়িতে আরেকটি বিয়ে করেছে। তার একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘রাফেজা খানম আমার ছেলে রুবেলকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে পরে জোরপূর্বক স্থানীয় গুন্ডাদের নিয়ে বিয়ে করে বসে।’

রুবেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি প্রতারণার শিকার। আমি বাধ্য হয়ে ওই প্রবাসীর স্ত্রীকে বিয়ে করেছি। মাঝখানে সে তার আগের স্বামীর কাছে চলে যাওয়ায় আমি তাকে ছেড়ে চলে এসেছি। এখন কিভাবে তাকে গ্রহণ করবো!’

বাংলাধারা/এফএস/এফএস

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ