২৩ অক্টোবর ২০২৫

ফুলপুরে চাঁদার দাবিতে কলেজ ছাত্রের মোটরসাইকেল ছিনতাই

 

ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলায় চাঁদার দাবিতে এক কলেজ ছাত্রের মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীর বাবা থানায় একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দাপট দেখিয়ে বেড়াচ্ছেন এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।

ফুলপুর উপজেলার চাড়ালপাড়া এলাকার শহীদুল ইসলামের ছেলে আল রাব্বি রিয়াদ (১৮) বওলা ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। গত ২৩ জানুয়ারি সকাল ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে তিনি বাবার HONDA X-BLADE (STD) মোটরসাইকেল নিয়ে কলেজে যাচ্ছিলেন। কলেজ গেটের সামনে পৌঁছালে অভিযুক্ত আবু ইউসুফ রাসেল (৪০) তার পথরোধ করে গালিগালাজ শুরু করেন।

আল রাব্বি রিয়াদ প্রতিবাদ করলে অভিযুক্ত রাসেল ক্ষিপ্ত হয়ে জোরপূর্বক তার মোটরসাইকেলের চাবি ছিনিয়ে নেন এবং বলেন, ১,৬০,০০০ টাকা চাঁদা না দিলে মোটরসাইকেল ফেরত দেওয়া হবে না। পরবর্তীতে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে অভিযুক্ত রাসেল মোটরসাইকেল নিয়ে চলে যান।

ভুক্তভোগীর বাবা শহীদুল ইসলাম জানান,
“আমার ছেলেকে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে অভিযুক্ত। সে বিএনপির দাপট দেখিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছে। আমি মোটরসাইকেল ফেরত চাইতে গেলে উল্টো আমাকে হুমকি দেওয়া হয়। আমি দুইবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু ফুলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আব্দুল হাদি বিষয়টি তদন্ত করে এড়িয়ে যান।”

তদন্ত কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানান, শহীদুল ইসলামের মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ সত্য। তবে, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ফজলুর রহমান হিরণ অভিযুক্ত রাসেলের পক্ষ নিয়েছেন বলেও তিনি জানান।

এদিকে, ভুক্তভোগীর পক্ষে যারা সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত ছিলেন, তাদেরও অভিযুক্ত রাসেল নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এতে স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এবং কেউই তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।

অভিযুক্ত আবু ইউসুফ রাসেলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,
“মোটরসাইকেলটি আমি নিয়ে এসেছি এবং ডিআইজি ও অফিসার ইনচার্জ আমাকে এটি ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছেন। আমি বর্তমানে বওলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। শহীদুল ইসলামের স্ত্রীর ভাইয়ের কাছে আমার ১,৬০,০০০ টাকা পাওনা আছে, তাই আমি মোটরসাইকেলটি নিয়ে এসেছি।”

এ বিষয়ে জানতে ফুলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আব্দুল হাদির মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে কল কেটে দেন।

এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবার দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে ন্যায়বিচার পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন