১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

ফেসবুকে হাজারো ভুয়া পেজ, আতঙ্কে গণ্যমান্য ব্যক্তিরা

সৈকত জোহা  »

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন ব্যক্তি আর প্রতিষ্ঠানের নামে ভুয়া পেজ খুলে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এইসব পেজ থেকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিভিন্ন ব্যক্তির চরিত্র হননের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

ফেসবুকে এমনই একটি পেজ এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ফাউন্ডেশন। চট্টগ্রামের প্রয়াত মেয়রের নামে কে বা কারা এই পেজটি খুলে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে কুৎসা রটনা করছে। অথচ মহিউদ্দিন চৌধুরীর পরিবারের কোন সদস্য এই পেজটির সাথে জড়িত নয়।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে মহিউদ্দিন চৌধুরীর বড় ছেলে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বাংলাধারাকে জানান, ‘এই পেজটি কারা পরিচালনা করে সেই বিষয়ে আমার ধারণা নেই। আমাদের পরিবারের কোন সদস্য এটার সাথে যুক্ত নয়। আমরাও কাউকে এই পেজ চালানোর অনুমতি দিই নাই। এটা একটা ফেইক পেজ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত এই ধরনের ফেইক পেজ খুলে যারা অপপ্রচার আর বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যবস্থা নেওয়া।’

এছাড়া প্যানেল মেয়র আব্দুস সবুর লিটনের নামেও ভুয়া পেজ খুলে অপপ্রচার চালাচ্ছে কে বা কারা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বাংলাধারকে জানান, ‘আমার একটি আইডি ও একটি পেজ। কিন্তু কে বা কারা আরও অনেক আইডি আর পেজ খুলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভিন্ন জনের নামে পোস্ট দিয়ে বিভ্রান্তির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত হবে এদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।’

এ বিষয়ে কিভাবে প্রতিকার পাওয়া যাবে তা জানতে চাইলে এডভোকেট জুবাইদা সরওয়ার চৌধুরী নিপা বাংলাধারাকে জানান, ‘ভুয়া আইডি নিয়ে আমি নিজেই আদালতে মামলা করতে গিয়েছিলাম কিন্তু আদালত মামলা নেয় নি। আদালত বলেছে, ভুয়া আইডি যে চালাচ্ছে অথবা আপনি যদি কাউকে সন্দেহ করেন তাহলে তাদের নাম উল্লেখ করে মামলা করতে হবে। ভুয়া আইডি কে চালাচ্ছে তা জানার জন্য পুলিশের কাছে কেস ফাইল করতে হবে। এর পর পুলিশ খুঁজে বের করবে কে আইডি পরিচালনা করছে। তখন ভুয়া আইডি পরিচালনাকারী ব্যক্তি মামলার আসামী হবে।’

এদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এই ধরণের অপরাধে একাধিক শাস্তির বিধান আছে। এই বিষয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন , ২০১৮ তে বলা হয়েছে-

২৪। (১) যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার প্রোগ্রাম, কম্পিউটার সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, কোনো ডিজিটাল ডিভাইস, ডিজিটাল সিস্টেম বা ডিজিটাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করিয়া- (ক) প্রতারণা করিবার বা ঠকাইবার উদ্দেশ্যে অপর কোনো ব্যক্তির পরিচয় ধারণ করেন বা অন্য কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত কোনো তথ্য নিজের বলিয়া প্রদর্শন করেন, বা (খ) উদ্দেশ্যমূলকভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে কোনো জীবিত বা মৃত ব্যক্তির ব্যক্তিসত্তা নিম্নবর্ণিত উদ্দেশ্যে নিজের বলিয়া ধারণ করেন,- (অ) নিজের বা অপর কোনো ব্যক্তির সুবিধা লাভ করা বা করাইয়া দেওয়া অপর কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিসত্তার রূপ ধারণ করিয়া কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিসত্তার ক্ষতিসাধন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।

(২) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৫(পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

(৩) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অপরাধ দ্বিতীয়বার বা পুনঃপুন সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৭ (সাত) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

বাংলাধারা/এফএস/এআর

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ