২৫ অক্টোবর ২০২৫

বঙ্গোপসাগরে দস্যুতা : অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ দু’জলদস্যু গ্রেফতার

সায়ীদ আলমগীর, কক্সবাজার »

বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার করে ফেরার পথে ডজনাধিক ফিশিং ট্রলার ডাকাতের কবলে পড়ে গত সাতদিনে। এসময় দস্যুরা অর্ধশত জেলেসহ একাধিক নিজেরা জিম্মি করে রাখে। অপহরণ করা জেলে ও বোট ছাড়তে দাবিকরা হয় মোটা অংকের মুক্তিপণ। এনিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেছে শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এসব ঘটনায় জড়িতদের সনাক্তে মাঠে নেমে জলদস্যুদের দু’সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫।

রবিবার (৮আগস্ট) দিবাগত রাত ১২ টার দিকে মহেশখালীর সোনাদিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা এ দুজনের কাছ থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদও জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব-১৫ এর মিডিয়া কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ শেখ সাদী।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কুতুবদিয়া উত্তর ধুরুং চেইন্দার পাড়ার নাজের হোসেনের ছেলে মো. রাশেদ ও একই ইউনিয়নের উত্তর ধুরুং ৯নং ওয়ার্ডের আবু তৈয়বের ছেলে মো. মিজান।

র‌্যাব-১৫ এর কর্মকর্তা শেখ সাদী জানান, গত ৬ আগস্ট গভীর সমুদ্রে জলদস্যুরা ২০টি মাছ ধরার বোট, আরোহণকৃত মাছ এবং জালসহ ৫০ জন জেলেকে আটকে রেখে পরিবারের কাছে ফোন করে মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করে। জেলেদের পরিবার মুক্তিপণ দিতে ব্যার্থ হলে জেলেদেরকে জলদস্যুরা মারধরসহ অমানবিক অত্যাচার করে মেরে ফেলার হুমকি দেন।

এমন অভিযোগে গত ৮ আগস্ট র‌্যাবের একটি দল অভিযানে নামে। অভিযানের এক পর্যায়ে র‌্যাব জানতে পারে যে, জলদস্যুরা জেলেসহ মহেশখালী সোনাদিয়া প্যারাবনে অবস্থান করছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১৫ এর একটি চৌকস অভিযানিক দল উক্ত স্থানে পৌছালে র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে জলদস্যুরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ধাওয়া করে তাদের মাঝে কক্সবাজার-সোনাদিয়া চ্যানেল থেকে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে ধৃত জলদস্যুদের হেফাজতে থাকা ৩টি একনলা বন্দুক ও ৫ রাউন্ড তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। এ সময় জলদস্যুরা স্বীকার করে যে, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া ও সোনাদিয়ার ডাকাতরা মিলে এ অপরাধ কর্ম সংঘটিত করছে।

পরে গ্রেফতারকৃতদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে মহেশখালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে । পাশাপাশি পলাতক জলদস্যুদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও উল্লেখ করেন র‌্যাবের এ কর্মকর্তা।

কক্সবাজার জেলা বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, সাগরে আবার ডাকাতি শুরু হয়েছে। চলতি মাছ ধরার মৌসুম শুরুর পর গত পক্ষকালে বেশকিছু ট্রলারে ডাকাতি হয়েছে বলে জেনেছি। আহরিত মাছ, জাল, বোটের ইঞ্জিন সবই লুট করেছে জলদস্যুরা। এসব করে ক্ষান্ত হয়নি, কিছু জেলেদের অপহরণ করে মুক্তিপণও চেয়েছে। এটা মরার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো। প্রশাসনের তৎপরতা আমাদের আশান্বিত করেছে। জলদস্যু নিয়ন্ত্রণ না হলে সাগরে মাছ শিকারে যেতে চাইবে না জেলেরা। তাই এ ব্যাপারে প্রশাসনের আন্তরিক সহযোগীতা চেয়েছি আমরা।

বাংলাধারা/এফএস/এআই

আরও পড়ুন