সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ গামী দু’টি যাত্রীবাহী ট্রলারকে লক্ষ্য করে মিয়ানমার সীমান্ত হতে ফের গুলি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। টানা দেড় শতাধিক গুলি বর্ষণ করা হয় বলে উল্লেখ করেছেন বোটে থাকা যাত্রীরা। তবে কারা এ গুলি বর্ষণ করেছেন সেটি জানা যায়নি। এ ঘটনায় ট্রলারের কোন যাত্রী হতাহতও হয়নি।
বুধবার (১৭ জুলাই) বেলা আড়াইটার দিকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটের নাফনদীর গোলারচরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতি আব্দুর রশিদ।
তিনি বলেন, বুধবার দুপুরের দিকে সেন্টমার্টিন থেকে দু’টি সার্ভিস ট্রলার ৭০ জন যাত্রী নিয়ে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের দিকে যাচ্ছিল।ট্রলার দু’টি নাফনদীর বাংলাদেশ জলসীমার গোলারচরের কাছাকাছি পৌঁছলে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে ট্রলার দুটি লক্ষ্য করে আনুমানিক দেড় শতাধিক গুলি ছুঁড়ে। তবে, এ ঘটনায় কেও হতাহত হয়নি।
পরে ট্রলার দুটি কোন রকম শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটে ভিড়েছে। যাত্রীদের মধ্যেই বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্যও ছিল।
শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটের বাসিন্দা মো. আমান উল্লাহ বলেন, সেন্টমার্টিন থেকে যাত্রী নিয়ে আসার সময় গোলারচরের কাছাকাছি পৌঁছালে তখন মিয়ানমার থেকে গুলি বর্ষণ শুরু করা হয়। ট্রলার দুটি ঝাউবাগান পার হয়ে শাহপরীর দ্বীপে আসা পর্যন্ত গুলি করতে থাকে। পরে ট্রলার দুটি যাত্রী নামিয়ে দিয়ে টেকনাফ জেটিঘাটে দিকে চলে যান।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, নাফনদীর ঘোলারচর পার হতে গিয়ে দুটি ট্রলারে মিয়ানমার হতে গুলি করেছে বলে আমরাও খবর পেয়েছি। কে বা কারা গুলি করে সেটা জানতে গোয়েন্দা তৎপরতা চালানো হচ্ছে। আমরা বিষয়টি উর্ধতন মহলে জানিয়েছি।
উল্লেখ্য, এর আগে বৈরী আবহাওয়ায় ২৯ মে সেন্টমার্টিনে স্থগিত হওয়া টেকনাফ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহন হয় ৫ জুন। নির্বাচনী কাজ শেষে ফেরার পথে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেটসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বহন করা ট্রলারে নাফনদীর নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে গুলি করা হয়।মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে কে বা কারা গুলি করেছে তা নির্ণয় করা যায়নি। এরপর ৮ জুন (শনিবার) আরও এক ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয় একই পয়েন্টে। সর্বশেষ ১১জুন (মঙ্গলবার) আরেক স্পিডবোটকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়। এরপর হতে সেন্টমার্টিন নৌপথে যান চলাচল একপ্রকার বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি প্রশাসনিক প্রচেষ্টায় বিকল্প পথ হিসেবে শাহপরীরদ্বীপ জেটিঘাট দিয়ে সেন্টমার্টিন আসা-যাওয়া করছে সার্ভিস ও স্পীড বোট। গত ২২ জুনের পর হতে এতদিন পর্যন্ত আর কোন অঘটন না হওয়ায় সবার মাঝে স্বস্তি নেমেছিল সেন্টমার্টিন যাতায়াত স্বাভাবিক হচ্ছে। কিন্তু বুধবারের ঘটনা আবারও আতংকিত করলো সবাইকে।