৫ নভেম্বর ২০২৫

‘বাংলাদেশের নার্স সারাবিশ্বে এক সময় অত্যন্ত মর্যাদার আসন পাবে’

বাংলাধারা ডেস্ক »

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের নার্স সারাবিশ্বে এক সময় অত্যন্ত মর্যাদার আসন পাবে এবং বাংলাদেশের মর্যাদা আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। ঠিক যেভাবে গতকাল ক্রিকেটে বিশ্বকাপ জয় করা ইংল্যান্ডকে বাংলাওয়াশ করা হয়েছে। এ রকম সকল ক্ষেত্রে বাঙালি এগিয়ে যাবে এবং মাথা উঁচু করে চলবে।

বুধবার (১৫ মার্চ) সকালে গাজীপুরের কাশিমপুরে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে নার্সিং কলেজ-এর দ্বিতীয় স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

২০০৯ থেকে ২০২৩ অন্তত এইটুকু দাবি করতে পারি আওয়ামী লীগ সরকারের টানা মেয়াদে বাংলাদেশকে বদলে দিতে পেরেছি বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ৩২টি স্নাতকোত্তর চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের ২২টি আমাদের সরকারের প্রতিষ্ঠা করা। ২০০৯ সালে ১৪টি সরকারি মেডিকেল কলেজে মাত্র দেড় হাজার ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির সুযোগ পেত। গত ১৪ বছরে অর্থ্যাৎ আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর সেই সুযোগ আমরা বৃদ্ধি করেছি। গত ১৪ বছরে ২৩টি নতুন মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছি। ফলে বর্তমানে চার হাজারের অধিক ছাত্র-ছাত্রী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পারছে।’

‘এ ছাড়া ৪৭টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। মানসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গবেষণা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ৫টি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকগুলো বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। ১৯৯৮ সালে আমরাই দেশে প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছিলাম, সেটাকে আরও উন্নতমানের আমরা করে দিচ্ছি। সেটা শুধু চিকিৎসা সেবা না, প্রশিক্ষণ ও গবেষণার জন্য সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান আমরা গড়ে তুলছি বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে। সেই সঙ্গে সারা বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সব সময় এটা মনে রাখতে হবে। যারা আজকে গ্র্যাজুয়েট হলেন, ডিগ্রী পেলেন। মনে রাখতে হবে যে, জনগণের সেবা দেওয়া। একজন রোগী চিকিৎসার ঔষধ খেয়ে যতটা না সুস্থ হয় আমাদের ডাক্তারদের কাছ থেকে সহানুভূতি এবং নার্সদের কাছে সেবা পেয়ে কিন্তু তার থেকে দ্রুত সুস্থ হতে পারে। তাদের ভেতর একটা আত্মবিশ্বাস জেগে ওঠে। তাই আমি বলব, আজকে যারা প্রায় চার বছর কঠোর অধ্যাবসায়ের ফসল হিসেবে আপনারা যারা নার্সের স্বীকৃতি পেয়েছেন। তারা নিশ্চয়ই জনগণের সেবায় নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করবেন।’

এ সময় বিশ্বের খ্যাতনামা নার্স ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেলের কথাও স্মরণ করে দিয়ে রোগীদের সেবায় ব্রত হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

তাই স্বাতক ডিগ্রীধারী নার্সদের সেবার ব্রত নিয়ে অর্জিত জ্ঞান কর্মক্ষেত্রে কাজে লাগানোর আহ্বান জানান। সকল ক্ষেত্রে আজ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এই ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদ করেন প্রধানমন্ত্রী।

যুব সম্প্রদায় নার্সিং পেশায় যুক্ত হয়ে দেশের পাশাপাশি বিদেশেও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। শুধু দেশে নয়, কর্মসংস্থানে বিদেশেও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এ পেশার বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই হাসপাতালের সঙ্গে যেহেতু নার্সিং কলেজ আগেই করেছি। আমরা একটা মেডিকেল কলেজও এখানে স্থাপন করবো। জায়গা আমাদের নেওয়া আছে। তবে আর্থিক বিষয়টা আমাদের একটা ট্রাস্টের মাধ্যমে করি। সেদিকে ব্যবস্থা নিচ্ছি। রিতিমত প্লান আমরা করে ফেলেছি। কাজেই আর্থিক সঙ্গতিটা আসলেই আমরা এখানে মেডিকেল কলেজ করে দেব। যাতে এই অঞ্চলের মানুষগুলি নিয়মিত সেবা পায়।’

এর আগে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কলেজে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এরপর এ প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট, হাসপাতাল সফটওয়্যার ও কেপিজে ঢাকা জার্নাল অব মেডিকেল সায়েন্সের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শেখ ফজিলাতু নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজের সিইও মো. তৌফিক বিন ইসমাইল। সমাপনী বক্তব্য দেন মালয়েশিয়া কেপিজে হেলথকেয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ইমেরিটাস দাতো ডা. লোকমান সাইম।

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ