দেবাশীষ বড়ুয়া রাজু, বোয়ালখালী »
জয়মণি দাশ। তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শাকপুরা চৌমুহনী বাজারে মামাদের সাথে মাছ কাটে সে। তাদের অভাব-অনটনের সংসার। তার বাবা স্থানীয় একটি লবণ কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন।
জয়মণির মামা সাগর মণি ও শ্রাবণ মণি দাসও একই কাজ করেন। দৈনিক ৫০ টাকা পায় সে। সেই টাকা মায়ের হাতে তুলে দেয় জয়মণি। জয়মণির মতো অনেকের সংসার চলে বাজারে মাছ কেটে।
জীবন-জীবিকার তাগিদে শাকপুরা চৌমুহনী বাজারে মাছ কাটতে আসেন ২০-২৫ জন নানা বয়সী মানুষ। তবে এর বেশির ভাগই শিশু-কিশোর। মাছ কেটে যা আয় হয় তাই দিয়ে চলে সংসার।
উপজেলার সবচেয়ে বড় মাছ বাজার হলো শাকপুরা চৌমুহনী বাজার। বিভিন্ন উপজেলা থেকে এ বাজারে মাছ নিয়ে আসেন মাছ ব্যবসায়ীরা। সপ্তাহে দুইদিন রবি ও বুধবার হাট বসে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাছ কাটাকুটিতে ব্যস্ত জয়মণিরা। একজন মাছের আঁশ ছাড়িয়ে দিচ্ছে, অন্যজন টুকরো করে দিচ্ছে। কেজিতে ১০ টাকা হিসেবে নেয় তারা।

মো. জামাল উদ্দিন নামের একজন মাছ ক্রেতা জানান, ৩ কেজি ওজনের একটি রুই মাছ ৩৫ টাকায় কেটে নিয়েছি। কয়েক মিনিটে কেটে দিয়েছে ওরা। বাড়িতে আস্ত নিয়ে গেলে এতো অল্প সময়ে কাটা যেত না।
মহিউদ্দিন নামের আরেক মাছ ক্রেতা বলেন, ছোট-বড় মাছ যাই বলেন, আজকালকার বউরা কাটতে চায় না। তাই ইচ্ছে না থাকলেও মাছ কেনার পর কেটে নিয়ে যাই।
সাগর মণি দাস জানান, শাকপুরা বাজারের রাস্তার পাশে দৈনিক ৩০০ টাকা ভাড়া দিয়ে বসতে হয়। গত ১০ বছর ধরে মাছ কাটছেন তিনি। প্রতি কেজি ১০-১৫ টাকা হিসেবে নেন। কেউ কেউ খুশি হয়ে বেশি টাকা দেয়, কেউবা আবার কম দিয়ে যান। খরচ বাদে দিনে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকার মতো থাকে, এতেই কোনো রকমে সংসার চলে যাচ্ছে।
রনি দাস বলেন, সকাল থেকে শুরু করি রাত ১০ টায় বাড়ি যাই। তাদের একজন করে সহযোগী রাখা আছে। এই সহযোগীরা কাস্টমার ডাকে, মাছের আঁশ ছাড়ায়, থলেতে কাটা মাছ ভরে দেয় আর আমরা কাটাকাটি করি।













