আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নাশকতা ও বিস্ফোরকসহ বিভিন্ন অভিযোগে বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা ৪৭৫টি মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।এসব মামলায় সংগঠনগুলোর প্রায় ১৫ হাজার নেতাকর্মী আসামি ছিলেন।
আইন মন্ত্রণালয়ের আইনশাখা-১-এর সিনিয়র সচিব মফিজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে গত বছরের অক্টোবরে চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল আদালত ৬৭ গায়েবি মামলা নিষ্পত্তি করে ৩ হাজার ৮৫৪ জনকে খালাস দেন।
আদালত সূত্র জানায়, রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার শুরু হয় চলতি বছরের এপ্রিলে। প্রথম দফায় ২১ এপ্রিল আইন মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বিএনপির ৪৪৬টি মামলা প্রত্যাহার করা হয়। এসব মামলার মধ্যে রয়েছে বিশেষ ক্ষমতা আইন, মারামারি, নাশকতা ও বিস্ফোরকদ্রব্যের মামলা। এগুলো ছিল চট্টগ্রাম মহানগরীর থানাগুলোতে।
দ্বিতীয় দফায় আইন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ২৪ এপ্রিল বাঁশখালী থানার একটি মামলা প্রত্যাহার করা হয়। তৃতীয় দফায় ২০ মে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানার একটি বিস্ফোরক মামলা প্রত্যাহার করে সরকার। এসব মামলায় আসামি ছিলেন ১৩ হাজার ১৭৯ জন। সর্বশেষ ১ জুলাই আইন মন্ত্রণালয় বিএনপি-জামায়াত ও হেফাজতে ইসলামের ২৭ মামলা প্রত্যাহার করে।
মামলাগুলোর মধ্যে ২৪টিই হেফাজতে ইসলামের মামলা বলে আইনজীবীরা নিশ্চিত করেছেন। এসব মামলার মধ্যে হাটহাজারী থানার মামলা ১১টি, ভুজপুর থানার ৪টি, খুলশি থানার ৩টি, রাঙ্গুনিয়া থানার ১টি, কর্ণফুলী থানার ১টি, ইপিজেড থানার ১টি ও হালিশহর থানার ১টি। এ ছাড়া কক্সবাজার সদর থানার একটি, ঢাকার ওয়ারী থানার একটি এবং কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম থানার একটি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় আসামি ১ হাজার ৩০০ জনের বেশি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশকে কেন্দ করে বিভিন্ন ঘটনায় চট্টগ্রামসহ সাত জেলায় ৮৩টি মামলা করা হয়। এসব মামলায় ৩ হাজার ৪১৬ জনের নামোল্লেখসহ ৮৪ হাজার ৯৭৬ জনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে দুটি মামলার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল পুলিশ। ১৮টি মামলার অভিযোগপত্র দিলেও এগুলোর বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। এ ছাড়া ২০২১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকালে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় চট্টগ্রামসহ সারা দেশে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১৫৪টি মামলা হয়। এখন এসব মামলা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার।
এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিকভাবে করা হয়রানিমূলক (গায়েবি) ৬৭ মামলার ৩ হাজার ৮৫৪ আসামিকে গত বছরের অক্টোবরে খালাস দেন চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালত।
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতের একাধিক নেতা কর্মী বলেন, তাদের বিরুদ্ধে করা এসব মিথ্যা মামলার কারণে তারা আর্থিক ও শারীরিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অনেকেই বছরের পর বছর জেল কেটেছেন। অনেকই পরিবার পরিজন ছেড়ে পলাতক জীবন যাপন করেছেন।
এআরই/বাংলাধারা













