৩১ অক্টোবর ২০২৫

বিপুল ভোটের ব্যবধানে চট্টলার ‘নগরপিতা’ হলেন রেজাউল

বাংলাধারা প্রতিবেদন  »

আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী আগামী পাঁচ বছরের জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৮৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন পেয়েছেন ৫২ হাজার ৪২৯ ভোট। নির্বাচন ভোট পড়েছে ২২ শতাংশ।  

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন।

ফলাফল ঘোষণা শেষে হাসানুজ্জামান বলেন, বেসরকারি ভাবে নৌকা প্রতীকের রেজাউল করিম চৌধুরী জয়যুক্ত হয়েছেন। মোট ৭৩৫ কেন্দ্রের মধ্যে ৭৩৩টি কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি দুটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করায় ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৪ লাখ ৩৫ হাজার ৪৯০টি। বাতিল হয়েছে ১ হাজার ৫৩টি।  

মেয়র পদ থাকা অন্য প্রার্থীদের মধ্যে মোমবাতি প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন পেয়েছেন ২ হাজার ১২৬ ভোট, আম প্রতীক নিয়ে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আবুল মনজুর পেয়েছেন ৪ হাজার ৬৫৩ ভোট, হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম পেয়েছেন ৪ হাজার ৯৮০ভোট, চেয়ার প্রতীক নিয়ে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ পেয়েছেন ১ হাজার ১০৯ ভোট ও হাতি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে খোকন চৌধুরী পেয়েছেন ৮৮৫ ভোট।

মহামারীর বাধা আর সংঘাত-সহিংসতা পেরিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নতুন নেতৃত্ব বেছে নিতে বুধবার (২৭ জানুয়ারি) ভোট দিয়েছেন বন্দরনগরীর বাসিন্দারা। নগরীর ৭৩৫টি কেন্দ্রে বুধবার সকাল ৮টায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে, শেষ হয়েছে বিকাল ৪টায়। নির্বাচন উপলক্ষে কেন্দ্রগুলোতে নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তবে এরমাঝেই দু’একটি কেন্দ্রে বিক্ষিপ্ত ভাবে সংঘর্ষ হয়।

নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী এবং বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের মধ্যে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ষষ্ঠ নির্বাচন গত বছরের ২৯ মার্চ হওয়ার কথা থাকলেও করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় আট দিন আগে তা স্থগিত করা হয়। এরপর পরিস্থিতির উন্নতি বিবেচনায় ২৭ জানুয়ারি ভোটের দিন ঠিক করে নির্বাচন কমিশন।

ব্রিটিশ আমলে গঠিত চট্টগ্রাম পৌর করপোরেশন সিটি করপোরেশনে রূপান্তরিত হয় ১৯৮৯ সালে। এরপর মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন জাতীয় পার্টির নেতা মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী। ১৯৯১-১৯৯৩ মেয়াদে বিএনপি নেতা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন এই পদে ছিলেন। ১৯৯৪ সালে প্রথম সিটি ভোটে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হন এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। টানা তিন বার তিনি ভোটে লড়ে জয়ী হয়ে মেয়রের চেয়ারে বসেন।

মহিউদ্দিন ২০১০ সালেও ভোটের লড়াইয়ে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এম মনজুর আলমের কাছে প্রায় এক লাখ ভোটে পরাজিত হন। মনজুর এক মেয়াদে দায়িত্ব পালনের পর আবার প্রার্থী হয়ে হারেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের কাছে।

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে ভোট শুরুর তিন ঘণ্টার মধ্যে ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন বিএনপির প্রার্থী মনজুর।আ জ ম নাছির এক মেয়াদে দায়িত্ব পালনের পর এবার আর দলের মনোনয়ন পাননি।

বাংলাধারা/এফএস/এআর

আরও পড়ুন