মাকসুদ আহম্মদ, বিশেষ প্রতিবেদক »
ক্রয়কারী বৃহৎ শিল্পের সঙ্গে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সাব-কন্ট্রাক্টিং সংযোগ ব্যবস্থার বাস্তবায়ন ও উন্নয়ন শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকালে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) জেলা কার্যালয় চট্টগ্রামের সভা কক্ষে এ আয়োজন করা হয়। এতে সাব-কন্ট্রাকটিং প্রতিষ্ঠান হিসাবে নিবন্ধিত হওয়ার পরও সরকারি বৃহদায়তন প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সংযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন বিষেয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। প্রায় অর্ধশত উদ্যোক্তার অংশগ্রহনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিসিক চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পরিচালক মোহাম্মদ মোতাহার হোসেন। সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকাস্থ বিসিক’র প্রযুক্তি বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথি চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আ.স.ম জামশেদ খোন্দকার বলেন, ২০৪১ সালের আগে আমরা কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাই। পণ্যের গুণগত মান ঠিক রাখলে অবশ্যই আমদানি নির্ভরতা হ্রাস করা সম্ভব। ক্রয়কারী বৃহৎ শিল্পের সঙ্গে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সাব-কন্ট্রাক্টিং সংযোগ ব্যবস্থার বাস্তবায়ন ও উন্নয়ন করতে বিসিক’কে মনিটরিং করতে হবে। যা ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ ও পণ্য ক্রয়ে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করবে।
বিসিক চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক আহমেদ জামাল নাসের চৌধুরী স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ক্রয়কারী বৃহৎ শিল্পের সঙ্গে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সাব-কন্ট্রাক্টিং সংযোগ ব্যবস্থার বাস্তবায়ন ও উন্নয়নের জন্য আজকের সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এতে মাধ্যমে প্রায় অর্ধশত উদ্যোক্তা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উন্নয়নে মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।

বুধবার বিসিক চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সভাকক্ষে প্রায় অর্ধশত ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উদ্যোক্তার আলোচনা থেকে বেশকিছু অভিযোগ উঠে এসেছে। এরমধ্যে রয়েছে, আমদানি নির্ভর বৃহদায়তন প্রতিষ্ঠানগুলোর অনীহার কারনে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প রুগ্ন শিল্পে পরিণত হচ্ছে। দেশীয় পণ্য ব্যবহার না করে ৩১টি সরকারি বৃদায়তন প্রতিষ্ঠান বিসিকের আওতায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকে রুগ্ন করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে সাব-কন্ট্রাকটিং প্রতিষ্ঠানের মালিকরা দাবি করছে বিসিকের মনিটরিং না থাকায় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে তৈরি পণ্যগুলো ব্যবহার করছে না। গুণগত মানের দোহাই দিয়ে বৃহদায়তন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো দেশীয় ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানগুলোকে এড়িয়ে যাচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে, ১৯৮৯ সালের ১ অক্টোবর গেজেট আকারে প্রজ্ঞাপন জারি হলেও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উৎপাদিত পন্য ব্যবহারে নারাজ। অথচ, পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৭৬ এর উপবিধি ১ এর দফা ‘ছ’ এ অনুর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও পিপিআর ২০০৮ এর সাব-কন্ট্রাকটিং গেজেট বিধিমালা ১৯৮৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ৩১টি সরকারি বৃহদায়তন প্রতিষ্ঠান বিসিকের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর সম্পাদন করলেও বিসিকের আওতাধীন সাব-কন্ট্রাকটিং ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদিত পণ্য ও যন্ত্রাংশ ব্যবহার করছে না। ১৯৮৬ সালে সাব কন্ট্রাকটিং কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় বিসিক।
আরও অভিযোগ রয়েছে, খুচরা যন্ত্রাংশ ও যন্ত্রপাতির চাহিদা দেশীয় ক্ষুদ্র কুটির শিল্পের মাধ্যমে পূরণ করতে নির্দেশনা দেয়া হলেও মানছে না সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সাব কন্ট্রাকটিং ব্যবস্থায় লিংকেজ স্থাপনের মাধ্যমে ধাতব, প্লাস্টিক, চীনা মাটি ইত্যাদি হতে প্রস্তুতকৃত যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ সংগ্রহের জন্য ২০১০ এর জাতীয় শিল্প নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।













