আজ ১৩ এপ্রিল, পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উৎসব বৈসাবি উদযাপিত হচ্ছে দ্বিতীয় দিনের আয়োজনে। বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, সাংলান, সাংক্রাই, সাংগ্রাইং, বিহু, পাতা ও চাংক্রান- এ সব নামেই পরিচিত এ উৎসব পাহাড়িদের প্রাণের উৎসব।
বৈসাবির দ্বিতীয় দিনটি চাকমারা ‘মূল বিজু’ ও ত্রিপুরারা ‘বিষিমা’ নামে ডেকে থাকেন। এদিনের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো ঐতিহ্যবাহী খাবার ‘পাঁচন’, যা বাঙালিদের কাছে পরিচিত ‘পাঁচন’ নামে। নানা রকম শাকসবজি, মূলা, কচু, কুমড়া, বরবটি, ঢেঁড়স, মিষ্টি কুমড়া, কলা ইত্যাদি দিয়ে তৈরি এ খাবার তৈরি হয় প্রায় ১২০ থেকে ১৫০ ধরনের উপকরণ দিয়ে।
রাঙামাটি ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা প্রহেলিকা ত্রিপুরা জানান, পাজন রান্নায় পরিবারের সব সদস্য সকালের দিকেই একসঙ্গে বসে কাজ করেন। যদিও সময়ের পরিবর্তনে সব উপাদান পাওয়া যায় না, তবে যতটুকু পাওয়া যায় তা দিয়েই পাজন প্রস্তুত করা হয়। দিনভর চলে অতিথি আপ্যায়ন আর আনন্দ-উৎসব।
পাহাড়ি-বাঙালি নির্বিশেষে সবাই এদিন পাজন উপভোগ করেন। অনেকের বিশ্বাস, বছরের শেষ বা শুরুতে এই খাবার খেলে নানাবিধ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
উৎসবের তৃতীয় দিন, অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল সোমবার, চাকমা ও ত্রিপুরারা পালন করবেন গোজ্জাই পোজ্জা, আর মারমা সম্প্রদায় উদযাপন করবে তাদের বহুল পরিচিত পানিখেলা উৎসব।
এবারের বৈসাবি উৎসবের সমাপ্তি হবে দুইটি বড় আয়োজনের মধ্য দিয়ে। ১৬ এপ্রিল রাঙামাটির রাজস্থলীর বাঙ্গালহালিয়া স্কুল মাঠে এবং ১৯ এপ্রিল রাঙামাটি জেলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে মারমাদের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই পানিখেলা।
পাহাড়ের মানুষজন যেমন সংস্কৃতিকে ধরে রেখেছেন, তেমনি উৎসবের আনন্দে মিলেমিশে এক হয়ে উঠেছে পাহাড়ি-বাঙালি সব সম্প্রদায়ের মানুষ।
এআরই/বাংলাধারা













