গিয়াস উদ্দীন, প্রতিনিধি »
চট্টগ্রামের পটিয়ায় ব্যস্ত কামারেরা দিন-রাত টুংটাং শব্দে মুখরিত উপজেলা বিভিন্ন বাজারের কামারের দোকান। কেউ ভারী হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন দগদগে লাল লোহার শিখা, আবার কেউ শান দিচ্ছেন ছুরি কিংবা বঁটি, কেউবা আবার কয়লার আগুনে বাতাস দিচ্ছেন। এরই মধ্যে চলছে বিক্রির ও অর্ডারের কাজ। কামারদের এই কাজ মাত্র বছরে একবার প্রায় মানুষের কাজে লাগে। প্রতি বছর এই সময়টার জন্য অপেক্ষায় থাকেন কামার শিল্পীরা।
কোরবানি ঈদের ২০-১৫ দিন আগ থেকেই বেচা-কেনার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে কামারেরা। উপজেলার কুরবানি দাতারা আসেন কামারদের কাছে। করোনার পরিস্থিতির কারণে আগের সেই আমেজ আর নেই তাদেরও। বিগত বছরের তুলনায় কাজ কমেছে দুই-তৃতীয়াংশ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন কামারের দোকানে অন্যান্য বছরের তুলনায় কাজ কম থাকলেও মোটামোটি সবাই কম বেশি কাজে ব্যস্ত আছে।
কামার সমর দে বলেন, অন্যান্য বছরে যে অর্ডার পেতাম তা একবারেই নেই। সারাদিনে ১০ থেকে ১৫ টা দা-বটিও বিক্রি হয় না।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সাধারণত পাঁচ ধরনের বঁটি, ছয় রকমের দা, ১৬ ধরনের ছুরি, সাত ধরনের কাবাব ছুরি, ১২ ধরনের জবাই ছুরি তৈরি করেন তারা। এছাড়া শান দেওয়ার জন্য এক ধরনের লোহার স্টিকও বিক্রি করে। প্রকারভেদে বটির দাম চারশ’ থেকে সাড়ে চার হাজার, গরু জবাইয়ের ছুরি ৫শ’ থেকে ১৮শ’, টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়া অন্যান্য ছুরি দুইশ’ থেকে পাঁচশ’ টাকায় বিক্রি করা হয়।
পটিয়া উপজেলার আমজুর হাট এলাকার এক কামারের দোকানে আসা ক্রেতা বলেন, অন্যান্য বছর আমাদের ঘরের যে ছুরি, দা, বটি, জবাই ছুরিসহ সব মিলিয়ে আমার আসতো ১৫শ’ টাকা। এ বছর করোনার প্রভাবে আমি তা দিলাম মাত্র ৮৫০টাকায়, তাও আমার কোন দর-দাম ছাড়াই।
কামার পনগাস বলেন, কাজ-রুজি নাই বললেই চলে। বাপ-দাদার পেশা হিসেবে লোহা পেটানোর কাজ করে আসছি। বৃদ্ধ বয়সেও কাজ করে যাচ্ছি। তবে আমার সন্তানদের কেউ এ পেশায় আসেনি এবং তাদের আসতেও বলিনি।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ













