পটিয়া প্রতিনিধি »
ঈদ করা হলো না তার অভিমানে আত্মহত্যা করলো এক নববধূ। দুই বছরের ভাই ও তিন বছরের বোনকে এবার ঈদে নতুন জামা দেওয়ার ইচ্ছা করেছিলেন বড় বোন জেসমিন আক্তার। জেসমিনের বিয়ে হয়েছে এক মাস আগে। টানা-পোড়েনের সংসার হলেও ঈদকে সামনে রেখে স্বামী জিয়াউর রহমানের কাছে নববধু জেসমিনের এবার তার চাওয়া ছিল তার দুই ভাই বোনসহ নিজের কাপড়। কিন্তু স্বামী জিয়াউর নববধূ জেসমিনকে ঈদের শাড়ি কিনে দিলেও অভাবের কারণে নববধূর চাওয়া পূরণ করতে পারে নি।
এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হয়। আর এটাই যেন কাল হয়ে দাঁড়ায় ওই পরিবারের। রাগে-অভিমানে স্বামীর দেওয়া ঈদের নতুন শাড়ির আঁচল গলায় প্যাঁচিয়ে সবার অগোচরে আজ ঈদের দিন ভোরের কোন এক সময়ে নববধূ জেসমিন আকতার শোয়ার ঘরে (১৯) ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। সকালে ঘুম ভেঙে স্বামী জিয়াউর রহমান দেখতে পাই তার স্ত্রী গলায় শাড়ি পেছিয়ে ঝুঁলে আছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পটিয়া উপজেলার হাইদগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিণ হাঈদগাঁও এলাকার গুচ্ছ গ্রামের ভাড়া বাসায় আজ সোমবার এ ঘটনা ঘটে।খবর পেয়ে পুলিশ সকাল আটটার দিকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠিয়ে ময়না তদন্ত শেষে বিকেলে হাইদগাঁও এলাকায় দাপন করা হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১ মাস আগে কক্সবাজার জেলার জিয়াউর রহমানের সাথে পটিয়া উপজেলার কেলিশহর ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রাম এলাকার সুমনের মেয়ে জেসমিন আকতারের বিয়ে হয়। জিয়াউর পটিয়াতে দিনমজুরের কাজ করায় ভাড়া বাসা নিয়ে থাকেন হাঈদগাঁও গ্রামে।
প্রতিদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে নববধূকে নিয়ে মোটামুটি সচ্ছলভাবেই দিন কাটছিল জিয়াউরের। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দিনমজুরের কাজ না পাওয়ার কারণে আর্থিক সংকটে পরতে হয় জিয়াউরকে। ফলে কিছুটা বেকায়দায় পড়েন তিনি।
পটিয়া থানার উপ-পরিদর্শক নুরুল আমিন জানান, শোয়ার ঘরের একটি কক্ষ থেকে গলায় নতুন শাড়ির আঁচল পেছানো অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ চমেক হাসপাতাল হতে নিয়ে এসে মেয়ের বাড়ি কেলিশহর গুচ্ছ গ্রাম এলাকায় দাপন করা হয়েছে। স্ত্রীর ইচছা ছিল তার ছোট ভাই বোনকে ঈদের কাপড় কিনে দেওয়ার। কিন্তু স্বামী ইচ্ছা পূরণ না করাতে স্বামীর প্রতি অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে। থানায় অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ













