চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের আরাকান মহাসড়কের মইজ্জ্যারটেক টোলপ্লাজায় চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম বন বিভাগের বিরুদ্ধে। কাগজে কলমে মইজ্জ্যারটেকে বন বিভাগের কোন চেকপোস্ট না থাকলেও সেখানে গাড়ি থামিয়ে প্রতিদিন চলছে লাখ টাকার নিরব চাঁদাবাজি।
সরেজমিনে দেখা যায়, সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রকাশ্যে বৈধ-অবৈধ সকল কাঠ, বাঁশ ও বনজদ্রব্য পরিবহনকারী ট্রাক থেকে বনরক্ষীরা চাঁদা আদায় করেন। চাঁদা আদায়ে অংশ নেওয়া সকলেই শহর রেঞ্জের বন কর্মকর্তা-কর্মচারী বলে জানা যায়। যদিও বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন নিশ্চিত করেছেন সেখানে বন বিভাগের কোন চেকপোস্ট নেই।

কাঠ বোঝাই ট্রাকের চালক মো. রফিক টোলপ্লাজা পার হয়ে নতুনব্রিজে এসে বলেন, মইজ্জ্যারটেক টোলপ্লাজায় বনবিভাগের লোকজন প্রতিটি ট্রাক থেকে ২-৩ হাজার করে টাকা আদায় করেন। বড় ট্রাক ও ছোট ট্রাক ভেদে চাঁদার অঙ্কেও হেরফের হয় বলে তিনি জানান।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বন বিভাগের লোকজন বৈধ কাগজপত্র চেকিং করার নামে কৌশলে চাঁদা নেন। ]চাহিদা মতো চাঁদা না দিলে বিভিন্নভাবে হয়রানিও করা হয়। বন বিভাগের সদস্যরা তাদের নিজস্ব গাড়িতে (ঢাকা মেট্রো – ঠ ১১-৪১৩৭) ঘটনাস্থলে এসে চেকপোস্ট বসিয়ে চাঁদা আদায় করতে দেখা গেছে। মাঝেমধ্যে তাতে অংশ নেয় বন বিভাগের একটি মোটরসাইকেলও।
একটি ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, কাঠ বহনকারী লরি ও ট্রাকগুলোকে টোলপ্লাজার সামনে দাঁড় করিয়ে বন বিভাগের লোকজন চাঁদা নিচ্ছেন।

অভিযোগ রয়েছে, চট্টগ্রাম পার্বত্য এলাকার তিনটি জেলা ও চট্টগ্রাম বিভাগের অন্য জেলা থেকে আসা বনজ কাঠ, ফার্ণিচার ও বাঁশসহ বিভিন্ন বনজদ্রব্য জেলায় জেলায় পরিবহনে ট্রানজিট পাসের দরকার হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও বন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাহিদা পূরণে বাধ্য হন ট্রাক চালকেরা।
এবিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম শহর রেঞ্জের বন কর্মকর্তা মো. আরিফুল আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল ও ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক বিপুল কৃষ্ণ দাস ও উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, মইজ্জ্যারটেক এলাকায় আমাদের অধীনে কেউ দায়িত্বে নেই। দক্ষিণের যিনি দায়িত্বে আছেন। ওনার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
এদিকে, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মইজ্জ্যারটেক এলাকায় বনবিভাগের কোনো চেকপোস্ট থাকার কথা না। যদিও থাকে তারা টাকা নেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। কোনো তথ্য প্রমাণ ও চাঁদাবাজিতে অংশ নেওয়া গাড়ির নম্বর থাকলে আমাদের কাছে পাঠান আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।













