কক্সবাজার প্রতিনিধি »
কক্সবাজারের মহেশখালীতে গত বছর আত্মসমর্পণ করা ৯৬ জলদস্যু ও অস্ত্র কারিগরের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল হতে ১ লাখ টাকা করে অনুদান দেয়া হয়েছে।
রোববার (৫ এপ্রিল) দুপুরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শহীদ এটিএম জাফর আলম সিএসপি সম্মেলন কক্ষে ৯৬ পরিবারকে ৯৬ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়।
মহেশখালীর কালারমারছরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আত্মসমর্পণকালে এসব জলদস্যু ও অস্ত্র কারিগরকে অনুদান দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিলো। এর আগে করোনায় লকডাইন থাকায় গত ২ এপ্রিল এ ৯৬ পরিবারে জেলা পুলিশের পক্ষে খাদ্য সহায়তাও দেয়া হয়।
জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে চেক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান। আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন ৯৬ জন জলদস্যু ও অস্ত্র কারিগরদের আত্মসমর্পণে মধ্যস্থতাকারী আনন্দ টিভি’র চট্টগ্রাম ব্যুরো চীফ ও কক্সবাজারের পেকুয়ার সন্তান এম.এম আকরাম হোসাইন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, কেউ ভালো হতে চাইলে রাষ্ট্র তাকে সহযোগিতা দিবে। এর প্রমাণ আত্মসমর্পণ করা ৯৬ পরিবারকে দেয়া অনুদান। এসব দেখে হলেও অন্যান্য অপরাধীদের আইনের কাছে আত্মসমর্পণের আহবান জানান বক্তারা। এসময় ৯৬ জন জলদস্যু ও অস্ত্র কারিগরদের আত্মসমর্পণের মধ্যস্থতাকারী আকরাম হোসাইনের প্রশংশা করেন তারা।
পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, আত্মসমর্পণ করে কারান্তরিণ থাকা ৯৬ জলদস্যু ও অস্ত্র কারিগরের পরিবারকে প্রতিশ্রুত মতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ হতে এক লাখ টাকা করে অনুদান দিতে পেরে আমরা আনন্দিত।
অনুদান পাবার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে এক জলদস্যুর স্ত্রী বলেন, আত্মসমর্পণের প্রস্তাব পেয়ে আমরা বলেছিলাম স্বামী কারাগারে থাকলে পরিবার চালানো দায়িত্ব কে নিবে? তখন মধ্যস্থতাকারী বলেছিলেন এসপি মহোদয় আপনাদের সংসার চালানোর দায়িত্ব নিবেন। স্বামীর স্বাভাবিক জীবনের স্বপ্ন দেখলেও সংসারের দায়িত্ব পুলিশ নিবে সেটা বিশ্বাস করতে পারিনি। কিন্তু আজ লাখ টাকার চেক ও দু’দিন আগে খাদ্য সহায়তা পেয়ে বিশ্বাস হলো পুলিশ কথা রাখে। এটা আমাদের জন্য বিশাল প্রাপ্তি।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পুলিশের আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিকসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কালারমারছরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক অনুষ্ঠানে ৯৬ জন জলদস্যু ও অস্ত্র কারিগরগণ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম, অস্ত্রশস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেছিলেন। এরপর থেকে তারা কারান্তরিণ রয়েছেন। তাদের মামলাগুলো নিষ্পতিতে আইনী সহায়তাও দিচ্ছে প্রশাসন।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ













