১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

মহেশখালীতে কয়লা বোঝাই ট্রাকসহ ব্রীজ ভেঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

জেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার »

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার ছোট মহেশখালীর উত্তর ও দক্ষিণকূলের খালের এক মাত্র সংযোগ সেতুটি মালবাহী ট্রাকসহ ভেঙ্গে পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

সোমবার (২৪ মে) সকালের দিকে একটি কয়লাভর্তি ট্রাক পার হওয়ার সময় ব্রিজটা ভেঙে পড়ে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।

সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ায় গোরকঘাটা থেকে শাপলাপুর হয়ে বদরখালী সড়কের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিছিন্ন হয়েগেছে।

স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ব্রিজের নিচ থেকে অবৈধভাবে বেপরোয়া বালি উত্তলোনের কারনে সেতুটি ভেঙে পড়েছে।

ছোট মহেশখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাস্টার এনামুল করিমের দাবি, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জহির সিকদারের ছোট ভাই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রিয়ান সিকদারের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজের নিচের অংশ ও আশপাশ থেকে বালি উত্তোলনের কারনে ব্রিজের মাঝখানের পিলারটি প্রথমে মাটি থেকে আলগা হয়ে যায়। এরপরে ব্রিজটি দেবে যায়। এ কারণেই সোমবার সকালে কয়লাভর্তি ট্রাক ব্রিজ পার হওয়ার সময় ট্রাকসহ ব্রিজটি ভেঙে পড়ে।

তিনি বলেন,বালি উত্তোলনের কারনে প্রশাসন রিয়ান সিকদারকে কয়েক দফায় ৩ থেকে ৪লাখ টাকা জরিমাণা করেছে।এর পরেও তিনি বালি উত্তোলন অব্যাহত রেখেছেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে রিয়ান সিকদার বলেন, নৌকা পেলেও না পেলেও আমি আসন্ন ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী এ কারনে অনেকেই হয়তো আমার নামে অপপ্রচার করছে।

তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ছোট মহেশখালী ইউনিয়ন আওয়ামীগের সেক্রেটারি মাস্টার এনামুল করিমকে মাসিক টাকা দিয়ে স্থানীয় মান্নান মেম্বার, গফুরসহ আরও কয়েকজন অবৈধভাবে এসব বালি উত্তোলন করেছেন।

রিয়ান সিকদার বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটা সাবেক মন্ত্রী মহিউদ্দীন খান আলমগীরের ‘জামায়াত শিবিরের ধাক্কায় রানা প্লাজা ভেঙে যাওয়ার মত’।

স্থানীয় সংবাদকর্মী রকিয়ত উল্লাহ জানান, শাপলাপুর ও ছোট মহেশখালীরসহ প্রায় ৫০ হাজার মানুষ ব্রিজটি ব্যবহার করে কক্সবাজার হাসপাতালসহ সদরে নানা কাজে যাওয়া-আসা করে থাকে। দ্রুত বিকল্প সড়কের ব্যবস্থা করা না গেলে অর্ধলক্ষ মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে পড়বে। অনেকের ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ হয়ে যাবে।

বালি উত্তলোনের কারনে ব্রিজ ভেঙে গেছে কিনা জাতে চাওয়া হলে মহেশখালীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান বলেন, ব্রিজের নিচ থেকে বা ব্রীজের আশেপাশের কোথাও বালি উত্তোলন খবর পেলেই আমি সেখানে উপস্থিত হয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।

তিনি বলেন, আমি মহেশখালীতে যোগদান করেছি মাত্র ৮মাস। এর মধ্যে শুধু ছোট মহেশখালী এলাকায় ৮টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৪লাখ টাকার মত জরিমানা আদায় করেছি।

মাহফুজুর রহমান আরও বলেন, গত বছরেও একবার ব্রিজটা ভেঙে গিয়েছিলো। এরপর জোড়া তালি দিয়ে মেরামত করে কোনরকম সেতুটা চালু করা হয়েছিল।

মহেশখালী উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ কুমার দে জানান, ব্রীজটি নানা প্রাকৃতিক কারণে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে ভারী যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষেধ ছিল। অধিক ধারণ ক্ষমতার ট্রাক চলাচলের কারণে ব্রীজটি ভেঙ্গে যায়। সেখানে নতুন ব্রীজ স্থাপনের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। অতিদ্রুত নতুন ব্রীজের কাজ শুরু করা হবে।

বাংলাধারা/এফএস/এআই

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ